হাসপাতালে নেই বেড, করোনা সংক্রমিত রোগী পড়ে থাকলেন হাসপাতালের বারান্দায়

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে (West bengal) লাগাতার বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। আতঙ্কে রয়েছে গোটা রাজ্যবাসী। পাশাপাশি হানা গিয়েছে মৃতের সংখ্যাও। এবার করোনা আক্রান্ত মহিলার ঠাঁই মিলল না কোভিড হাসপাতালে। ফলে রাতভর আইসোলশন সেন্টারের বারান্দায় পড়ে রইলেন সংক্রামিত মহিলা।

জানা গিয়েছে, প্রবল জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মালদা (Malda) মডেল মাদ্রাসায় সিঁড়ির পাশে রাত কাটাতে বাধ্য হলেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। রবিবার দুপুরে সংক্রামিত ওই মহিলাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে পুরাতন মালদার কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বেড মেলেনি। দীর্ঘক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্সে অপেক্ষা করতে হয় গুরুতর অসুস্থ ওই মহিলাকে।

c0481846 wuhan novel coronavirus illustration spl

এদিন পুরাতন মালদার কোভিড হাসপাতাল থেকে একজন ছুটি পান। তারপরেই ফাঁকা হওয়া বেডে জায়গা হয় ওই মহিলার। এই ঘটনায় মালদায় কোভিড চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল অবস্থা সামনে চলে আসে। মালদা জেলায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। এমন পরিস্থিতিতে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আরও একটি কোভিড হাসপাতাল চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সংক্রামিত মহিলার বাড়ি মানিকচকে। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে মালদা মেডিকেলে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা প্রথমে জানান, ওই মহিলার টিবি হয়েছে। সেই মতো চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু গত তিনদিন আগে মহিলার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাঁকে মেডিকেলের সারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাঁর লালা পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।

corona 3 3

শনিবার স্বাস্থ্য দপ্তর ও মানিকচক থানার পুলিশের তরফে বিষয়টি পরিবারের লোকেদের জানানো হয়। ওই মহিলার পাশে পরিবারের লোকেদের থাকতে নিষেধ করা হয়। অগত্যা পরিবারের লোকেরা সকলেই বাড়ি ফিরে যান। অভিযোগ, রবিবার মেডিকেল কলেজে ওই মহিলার পরিবারের সদস্যদের থার্মাল টেস্ট করেই ছেড়ে দেওয়া হয়।তখন সংক্রামিত মহিলার পরিবারের সদস্যদের লালা পরীক্ষা না করলে সংক্রমণ আরও ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদেরই একাংশ।

মালদা মেডিকেলের তরফে শনিবার রাত ১২টা নাগাদ ওই মহিলাকে মডেল মাদ্রাসার আইসোলশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ও শরীর দুর্বল থাকায় সংক্রামিত মহিলা আইসোলশন সেন্টারের সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে পারেননি। মডেল মাদ্রাসার তিনতলায় আইসোলশন সেন্টার করা হয়েছে। সেখানে উপসর্গহীনদের রাখার কথা।

kovid 0p

কিন্তু ওই মহিলা উপসর্গযুক্ত হওয়ার পরেও কেন তাঁকে আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। হেঁটে তিনতলায় উঠতে না পেরে তিনি সিঁড়ির পাশেই শুয়ে পড়েন। এভাবেই সারারাত সেখানে পড়ে থাকেন তিনি। এদিকে পুরাতন মালদার কোভিড হাসপাতালের কর্তারা জানান, বেড ফাঁকা নেই। তাই ওই মহিলাকে ভর্তি করতে পারিনি।

সম্পর্কিত খবর