বাংলাহান্ট ডেস্কঃ আতঙ্কিত এবং আক্রান্তের সংখ্যা থাকলেও, ভিয়েতনামে (Vietnam) করোনা (COVID-19) মৃতের সংখ্যা শূণ্য। আক্রান্ত মাত্র ২৬৮ জন। প্রতিবেশি দেশ চীনে মারণ রোগ করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হলেও, ভিয়েতনামে কিন্তু এখনও অবধি একজন ব্যক্তিও প্রাণ হারাননি। এমনকি আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কয়েকগুণ কম। মেনে চলা হচ্ছে সমস্ত করোনা সতর্কীকরণ বিধি।
লন্ডনের কিংস কলেজের পলিটিক্যাল ইকনমির সিনিয়র লেকচারার রবিন ক্লিংগার-ভিড্রা এবং ইউনিভার্সিটি অব বাথের পিএইচডি গবেষক বা-লিন ট্রান এই দুই গবেষক ভিয়েতনামের করোনা আক্রান্তের বিষয়ে পর্যালোচনা করে গ্লোবাল পলিসি জার্নালে তাঁদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন। তারা জানান ভিয়েতনাম সরকার প্রথম থেকেই বেশ কয়েকটি বিষয় মেনে চলেছিল, যার ফলে তারা এখন অনেকটাই সুরক্ষিত।
তারা জানান, করোনা ভাইরাসের উৎসের প্রথম থেকেই ভিয়েতনাম সরকার রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কঠোর ভূমিকা নিয়েছিলেন। বিদেশ থেকে আগত কোন ব্যাক্তির জন্যই প্রথমেই বিমানবন্দরে তাপীয় স্ক্রীনিং পদ্ধতির চালু করা হয়েছিল এবং একটি ফর্ম ফিলাপের প্রক্রিয়াও করা হয়েছিল। শারীরিক তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকলে, তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত। আবার যদি কোন ব্যক্তি ওই ফর্মে ভুল তথ্য দিয়ে থাকে, তাঁর বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও টেস্টিং এবং কনট্যাক্ট ট্রেসিং ব্যবস্থায় চাল করা হয়েছিল। এবং কোন এলাকায় একজন আক্রান্তের খবর পাওয়ার পরই সেই এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাতেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিদের সরাসরি ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখার হয়েছিল। এমনকি দেশের মধ্যে এক শহর থেকে অন্য শহরে প্রবেশ করা ব্যক্তিদেরকেও কোয়ারেন্টিন করা হয়েছিল। তবে যদি কোন ব্যক্তি নিজের শহর ছেড়ে অন্য শহরে থাকার জন্য যেতে চান, তাহলে তাঁকে নিজ খরচায় প্রথমে কোয়ারেন্টিন থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ভিয়েতনাম সরকার প্রথম থেকেই এই মারণ রোগ করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে সতর্ক বার্তা দিয়েছিল। এমনকি প্রত্যেক নাগরিকদের ফোনে করোনা সতর্কতা বিষয়ক ম্যাসেজও পাঠানো হয়েছিল। এছাড়াও বিভিন্ন পোস্টার ছাপিয়ে, সর্তক বার্তা প্রেরণ করে নাগরিকদের সুরক্ষিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এইভাবে বিভিন্ন রকম সতর্কতামূলক পন্থা অবলম্বন করে, বর্তমানে ভিয়েতনাম বিশ্বের অন্য কোন দেশ অপেক্ষা অনেকটাই সুরক্ষিত রয়েছে।