ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে কোনও ধর্ষণই হয়নি! পুলিশে রিপোর্টে উল্লেখ নেই ৬০% মামলার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে কোনও ধর্ষণই হয়নি, হাতেগোনা কয়েকটি শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় পুলিশের রিপোর্টের সঙ্গে বিস্তর ফারাক মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের। পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন হয়েছে ২৯ জন। অন্যদিকে কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে ধর্ষিতা হয়েছে ১৪ জন। আর ৫২টি খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সমস্ত তথ্য তুলে ধরেন মামলাকারীদের আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি। অন্যদিকে সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল অভিযোগ করেন যে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন মেনে কাজ করেনি। তিনি বলেন, আইন মেনে কাজ না করার কারণে তাঁদের রিপোর্টে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।

উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শাসক দলের অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছি। আদালত ভোট পরবর্তী হিংসার তথ্য খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে। যদিও, রাজ্য এই মামলা থেকে কমিশনকে সরানোর আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের আবেদন খারিজ করে কমিশনের হাতেই এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়।

এরপর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করে কমিশন। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য তাঁরা ওই রিপোর্টে কয়েকটি সুপারিশও করে। এছাড়াও কমিশনের রিপোর্টে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে আখ্যা দেওয়ায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়।

সোমবার অভিযোগকারীদের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘খুন ও ধর্ষণ নিয়ে রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। রাজ্য পুলিশ যেই রিপোর্ট দিয়েছে তাঁর সঙ্গে কমিশনের রিপোর্টের ৬০ শতাংশ ব্যবধান রয়েছে। পুলিশ বলছে কোনও ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়েনি। অথচ নির্যাতিতাদের মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” এই বিষয়ে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, থানায় অভিযোগ দায়ের না হলে পুলিশ সুপারের কাছে যেতে পারত তাঁরা। অথবা জেলা আদালতে।

MAHESH JETHMALANI
মহেশ জেঠমালানি

অন্যদিকে কমিশনের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি জানান, ১৯৯৩-র আইন অনুযায়ী তদন্ত করেনি কমিশন। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আদালত বলেছিলে, ওঁরা তথ্য সংগ্রহ করে জমা দেবে। কিন্তু তাঁরা একাধিক সুপারিশ করে। এটাও আইনের আওতায় পড়ে না। তিনি এও অভিযোগ করেন যে, কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক রয়েছে।

Avatar
Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর