বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছরে ইতিমধ্যেই একাধিক গ্রহাণু (Asteroid) ধেয়ে এসেছে পৃথিবীর দিকে। যদিও, সেগুলির নিরাপদ দূরত্বের জন্য বিশ্বের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। সর্বোপরি, সেগুলি সবই ধেয়ে এসেছিল এক এক করে। কিন্তু, এবার একসাথে দু’টি প্রকান্ড গ্রহাণু ক্রমশ ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। শুধু তাই নয়, মাত্র একদিনের ব্যবধানেই তারা চলে আসবে খুব কাছে। স্বাভাবিকভাবেই, এই ঘটনায় আশঙ্কায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরাও।
এমনিতেই একই সঙ্গে, একই সময়ে দু’টি গ্রহাণুর পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। কিন্তু, এবার সেই বিরলতম ঘটনাই ঘটতে চলেছে। জানা গিয়েছে, ২৯ জুলাই এবং ৩০ জুলাই পরপর দু’দিন পৃথক পৃথক দু’টি গ্রহাণু ধেয়ে আসবে পৃথিবীর দিকে। এর মধ্যে ২৯ জুলাই অর্থাৎ শুক্রবার, অন্তত ৪০০ ফুট চওড়া একটি গ্রহাণু ধেয়ে আসতে চলেছে। এটি আমাদের গ্রহের খুব কাছ দিয়েই চলে যাবে। পাশাপাশি, আগামী শনিবার প্রায় ৬০০ ফুট চওড়ার আরেকটি গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে চলেছে।
এমনকি, সাম্প্রতিককালে এরকম বড় আকারের কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসেনি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমতাবস্থায়, এই খবর সামনে আসার পর থেকেই তৈরি হয়েছে এক আতঙ্কের আবহ। পাশাপাশি, পরপর দু’টি গ্রহাণুর ধেয়ে আসার ফলে আদৌ পৃথিবীর কোনো ক্ষতিসাধন হবে কিনা সেই বিষয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই প্রসঙ্গে মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এই দু’টি গ্রহাণুর মধ্যে কোনোটার সাথেই পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে, এর পাশাপাশি তাঁরা ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, যেকোনো মুহূর্তে গ্রহাণুর পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বদল আসতে পারে। এমনকি, তাদের গতি বৃদ্ধির পাশাপাশি অভিমুখ পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
তাই, এগুলির গতিবিধিকে যাচাই করতে একটানা পর্যবেক্ষণ করতে হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA এই দু’টি গ্রহাণুকে “পোটেনশিয়ালি ডেঞ্জারাস”-এর তালিকায় রেখেছে। অর্থাৎ, এর অর্থ হল, এই গ্রহাণুগুলি যেকোনো মুহূর্তে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, ক্ষতি করতে পারে পৃথিবীরও।
গ্রহাণুগুলির নাম: জানা গিয়েছে, ওই গ্রহাণু দু’টির নাম হল ২০১৬ সিজেড৩১ (2016 CZ31) এবং ২০১৩ সিইউ৮৩ (2013 CU83)। এগুলির মধ্যে শুক্রবার পৃথিবীর কাছ দিয়ে চলে যাবে ২০১৬ সিজেড৩১ গ্রহাণুটি। মূলত, পৃথিবীর সাথে এটির দূরত্ব থাকবে ২.৮ মিলিয়ন কিলোমিটার। অপরদিকে, ৩০ জুন অর্থাৎ শনিবার পৃথিবীর কাছে আসবে ২০১৩ সিইউ৮৩ গ্রহাণুটি। এদিকে, এই গ্রহাণুটির সাথে পৃথিবীর দূরত্বের ব্যবধান থাকবে প্রায় ৬৯ লক্ষ কিলোমিটার।