বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজস্থানের (Rajasthan) বারমেরের ভিমদা গ্রামে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ে। এদিকে, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় ফাইটার জেটের দুই পাইলট শহীদ হন। জানা গিয়েছে যে, ওই বিমানটি ভেঙে পড়ার আগেই তাতে আগুন ধরে যায় এবং চারিদিক থেকে সেটি জ্বলতে থাকে। শুধু তাই নয়, সেই বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তা আশপাশের এলাকায় ৮-১০ কিলোমিটার পর্যন্ত শোনা গিয়েছিল। এমনকি, ঘটনাস্থলের আধ কিলোমিটার পর্যন্ত বিমানের ধ্বংসস্তূপের ফলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
বেঁচে গিয়েছে ২,৫০০ জনের প্রাণ: এমতাবস্থায়, ওই জ্বলন্ত বিমানটি যদি সরাসরি গ্রামের ওপরে পড়ে যেত, সেক্ষেত্রে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের জীবন বিপদে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিমান বাহিনীর ওই দুই পাইলট নিজেদের জীবনের পরোয়া না করেই গ্রামবাসীদের জীবন বাঁচাতে উদ্যত হন। যদিও, শেষপর্যন্ত তাঁরা নিজেরাই শহীদ হয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মিগ-২১ যুদ্ধবিমানটিতে আকাশেই আগুন ধরে যায়। সেই অবস্থায় প্লেনটি যাতে জনবহুল গ্রামে ভেঙে না পড়ে, সেইজন্য দু’জন পাইলটই সেটিকে একটি বালুকাময় জায়গার দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন।
Wing Commander M Rana and Flight Lieutenant Advitiya Bal are the two pilots who lost their lives in MiG-21 fighter aircraft crash in Barmer, Rajasthan last evening. pic.twitter.com/khvm0QKRR9
— ANI (@ANI) July 29, 2022
জানা গিয়েছে, উইং কমান্ডার মোহিত রানা এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অদ্বিতীয় বল, এই বিমানটি ওড়াচ্ছিলেন। এমতাবস্থায়, বিপদ বুঝে তাঁরা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেন যে, নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করেই তাঁরা জ্বলন্ত বিমানটিকে গ্রাম থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবেন। সেই অনুযায়ী, জ্বলন্ত অবস্থাতেই তাঁরা প্রায় দু’ কিলোমিটার পর্যন্ত বিমানটিকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন।
https://twitter.com/flybydot/status/1552884471535247360?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1552884471535247360%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.indiatimes.com%2Fhindi%2Ftrending%2Fstory-about-two-pilots-who-saved-2500-peoples-576031.html
খোলা হয়নি প্যারাসুট: এই ভয়াবহ ফাইটার প্লেন দুর্ঘটনায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষ প্রায় ১ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, দুর্ঘটনার সময় বিমানে উপস্থিত দুই পাইলটের প্যারাসুট খোলা ছিল না। মূলত, উভয় পাইলটই তাঁদের জীবনকে বাজি রেখে ২,৫০০ জনের প্রাণ বাঁচান। এদিকে, এই দুর্ঘটনার পর শহীদ পাইলটদের পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েন। পাশাপাশি, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অদ্বিতীয় বলের মা কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও, এই খবর সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়েও নেমে এসেছে শোকের ছায়া।