বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলাদেশের (Bangladesh) সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ। বর্তমানে মায়ানমারের বিদ্রোহী আরাকান সেনাবাহিনীর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে রাখাইন প্রদেশে। মায়ানমার সরকার থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের জন্য স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসা আরাকান সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ এবার চিন্তা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ (Bangladesh) সীমান্তের পরিস্থিতি
মায়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সেনাবাহিনী এবং আরাকান সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধির সাথে সাথেই উত্তেজনার পারদ চড়ছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাতেও। এই আবহেই আগামী ২৪শে মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোয়েল জেবি ভওয়েল। মার্কিন এই সেনাকর্তার বাংলাদেশ সফরের মূল উদ্দেশ্যই হল বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করা।
আরও পড়ুন : মেয়ের মৃত্যুর পর মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন এই দুই TMC নেতা! এত দিনে নাম ‘ফাঁস’ করলেন তিলোত্তমার মা-বাবা
বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে আরাকান সেনাবাহিনী এবং মায়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে জোয়েল জেবি ভওয়েলের বাংলাদেশ (Bangladesh) সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান সেনাবাহিনীর প্রধান টার্গেটের মধ্যে রয়েছে সিত্তে, কিয়াকফিউ এবং মানাংয়ের মতো শহরগুলি।
আরও পড়ুন : পোয়া বারো! অষ্টম বেতন কমিশনে এই ফর্মুলায় বেতন ও পেনশন বাড়বে সরকারি কর্মীদের, জানুন
এই অঞ্চলগুলিতে যেকোনও ধরনের সামরিক পদক্ষেপের প্রভাব সরাসরি পড়তে পারে বাংলাদেশের উপর। এই আবহে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে আগামী দিনে আরও তৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে। নর্থইস্ট নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে মার্কিন সেনা প্রশান্ত মহাসাগরীয় (USARPAC) এর ডেপুটি কমান্ডিং জেনারেল পদে রয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোয়েল জেবি ভওয়েল।
তাঁর সাথে আসন্ন বাংলাদেশ সফরে আসতে চলেছেন অন্যান্য USARPAC কর্মকর্তারাও। সূত্রের খবর, বাংলাদেশ সফরকালে জোয়েল জেবি সাক্ষাৎ করতে পারেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অপারেশনস মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আলিমুল আমিনের সাথে। এই সাক্ষাতে দুই সেনা কর্তার আলোচনায় উঠে আসতে পারে সীমান্ত নিরাপত্তা, সামরিক প্রস্তুতি এবং যৌথ সহযোগিতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি।
বিশেষজ্ঞদের মত, মার্কিন সেনা কর্তার এই সফর ভবিষ্যতে আমেরিকা ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সম্পর্ক আরও মজবুত করতে পারে।পাশাপাশি, রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্যও। ভারতের কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (কেএমটিটিপি) এর অংশ এই বন্দরটি মায়ানমারের মাধ্যমে সমুদ্রপথে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মিজোরামকে সংযুক্ত করে।
কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রকল্প ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বাণিজ্য এবং সংযোগের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে সিত্তে বন্দরের। তাই স্বাভাবিকভাবেই রাখাইন প্রদেশে যেকোনও ধরণের সামরিক পদক্ষেপ বা উত্তেজনা উদ্বেগ সঞ্চালিত করতে পারে ভারতের মনেও। এই আবহে গোটা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখে চলেছ ভারতও।