অদ্ভুত! ২৪ হাজার বছর ঠাণ্ডা কবরে সমাহিত, তবুও ছিল জীবিত! তৈরি করল নিজের ক্লোনও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কবরে সমাহিত থাকার পরেও কি কেউ কখনও হাজার হাজার বছর যাবৎ বেঁচে থাকতে পারে? এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই উত্তর হবে “না”। কারণ, কবরে সমাহিত হয়ে বেঁচে থাকা একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু, এই অসম্ভবকে সম্ভব করেই কার্যত বিজ্ঞানীদের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে এক অণুবীক্ষণিক জীব। মূলত, বিশ্বের অন্যতম শীতল স্থান সাইবেরিয়া থেকে আর্কটিকের পারমাফ্রস্টের বিজ্ঞানীরা একটি ছোট প্রাণী আবিষ্কার করেছেন, যা প্রায় ২৪,০০০ বছর ধরে খাওয়া-দাওয়া ভুলেই রীতিমত শীতল কবরে সমাহিত রয়েছে।

তবে, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এত বছর সমাহিত থাকা সত্বেও সেই জীবটি একেবারে সঠিক অবস্থাতেই ছিল। শুধু তাই নয়, সেটিকে ফের বাইরে বের করা মাত্রই সেটি নিজের মত করে আরেকটি জীব তৈরি করে ফেলেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এগুলি হল আণুবীক্ষণিক জম্বি প্রাণী, যাদের ৫০ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন জলীয় অঞ্চলে পাওয়া যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, যেখান থেকে এটিকে পাওয়া গিয়েছে, সেখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এবং সর্বত্র তুষারপাত ঘটত। যদিও, এইসব প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা, ওই জীবের শরীরে কোনোরকম প্রভাব ফেলেনি।

এদিকে এই প্রসঙ্গে, রাশিয়ার ইনস্টিটিউট অফ ফিজিকোকেমিক্যাল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল প্রবলেম ইন সয়েল সাইন্সের সাথে যুক্ত স্টাস মালবিন জানিয়েছেন যে, এর আগে এমন রোটিফার পাওয়া গেছে, যা -২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ১০ বছর বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু, এবার তাঁরা এমন একটি রোটিফার পেয়েছেন, যা সাইবেরিয়ান পারমাফ্রস্টে সমাহিত ছিল হাজার হাজার বছর ধরে।

এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে যে, এই ক্ষুদ্র প্রাণীটি এত বছর ধরে নিজেকে সমাহিত করে নিজের জীবন বাঁচিয়েছে। ডেলিড রোটিফার্স নামের এই জীবের শরীরের অগ্রপ্রান্ত লোমশ হয়। এছাড়াও, এগুলি মূলত অণুবীক্ষণিক বহুকোষী প্রাণী।

বিজ্ঞানীরা বলছেন যে হিমযুগে সাধারণত স্বচ্ছ জলে বসবাসকারী এই প্রাণীরা পারমাফ্রস্টে হিমায়িত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি, এই রোটিফেরার একটি দীর্ঘ দেহ রয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ০.০৪ থেকে ২ মিলিমিটার পর্যন্ত। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলির দৈর্ঘ্য ০.৫ মিলিমিটারের মধ্যেই থাকে। তবে, আকারে ছোট হওয়া সত্ত্বেও এদের দেহের অভ্যন্তরে অনেক জটিল ব্যবস্থা রয়েছে, যা মাইক্রোস্কোপ ছাড়া দেখা যায় না।

118833502 tv067885366

পাশাপাশি, জানা গিয়েছে যে, এই জীবগুলি অযৌন জনন সম্পন্ন করে। ফলে তারা নিজেরাই নিজেদের মতো করে জীব তৈরি করে নেয়। এই কারণেই বিজ্ঞানীরা এটিকে জীবিত করার সাথে সাথে সেটি এর ক্লোন তৈরি করতে শুরু করেছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর