গোয়ালে নয়, গরু-বাছুরদের ঘরেই রাখেন এই পরিবার! ভালবাসেন সন্তানদের মতোই

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাড়িতে কুকুর-বিড়ালের মতো পোষ্য নিয়ে থাকতে পছন্দ করেন অনেকেই। পরিবারের সকল সদস্যের কাছেই অত্যন্ত “আদুরে” হয় তারা। কিন্তু, রাজস্থানে এমন একটি পরিবার রয়েছে যাঁরা তাদের বাড়িতে গরু, ষাঁড় এবং বাছুর নিয়ে থাকেন! শুধু তাই নয়, তাদের পরিবারের সদস্য হিসাবেও বিবেচনা করা হয়।

আর সেই কারণেই যোধপুরের হাউজিং বোর্ড থানা এলাকার সুভাষ নগরে বসবাসকারী প্রেম সিং কাছোয়ার পুরো পরিবার এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। প্রেম সিং কাছোয়া এবং তাঁর স্ত্রী সঞ্জু কাছোয়া পরিবারের আর বাকি সদস্যদের মতোই তাঁদের বাড়িতে গরু এবং ষাঁড় রাখেন। শুধু তাই নয়, বাড়িতে থাকা গরু, বাছুর ও ষাঁড়ের নামও দিয়েছেন তাঁরা।

এই প্রসঙ্গে সঞ্জু জানান যে, তাঁর বাড়ির গরুর নাম “গোপী”, বাছুরের নাম “গঙ্গা” এবং ষাঁড়ের নাম দেওয়া হয়েছে “পৃথু”। পাশাপাশি তিনি আরও জানান যে, তিনি প্রায়ই বাছুরটির সাথে খেলেন, তাকে স্নেহের সাথে স্নান করান এবং তার শোবার ঘরে ঘুমান। তিনি আরও বলেন, গরুতে ৩৩ কোটি দেবতা বাস করেন। কেউ কেউ শুধু দুধের জন্য তাদের লালন-পালন করে এবং দুধ না দিলে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়।

সঞ্জুর আবেদন, বাড়িতে গরু রাখলে বাড়ির নেতিবাচক শক্তি শেষ হয় এবং ঘরে সুখ থাকে। এর পাশাপাশি, সঞ্জু সরকারের কাছে গরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করার দাবি জানান। এমনকি, যারা চাষের কাজ করতে অক্ষম সেই সমস্ত গবাদি পশুর জন্য একটি পৃথক আইন নির্ধারণ করার দাবিও জানান, যাতে কেউ তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে না পারে।

এদিকে, প্রেম সিং জানিয়েছেন যে, তাঁর বাড়িতে থাকা গরু এবং ষাঁড়ের বিছানাটি খুবই আরামদায়ক। কিন্তু মলত্যাগের সময় তারা বিছানা থেকে উঠে তাদের নির্ধারিত জায়গায় চলে যায়। কখনো ঘর নোংরা করেনা তারা।

IMG 20220106 212106

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, বর্তমানে সঞ্জুর বাড়িটি “কাউ হাউস” নামে পরিচিত। একবার মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের একটি দল সঞ্জুর বাড়িতে এসে তাঁর সমস্ত গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল। এমতাবস্থায়, সঞ্জু ও তাঁর স্বামী সিদ্ধান্ত নেন যে, তাঁরা এবার তাঁদের ঘরেই গরু, ষাঁড় ও বাছুর রাখবেন। পাশাপাশি, শীতের সময়ে তাঁদের ভালোভাবে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখাও হয়।

এই পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন যে, তিনি বাড়িতে শুধু গরু লালন-পালন করেন কিন্তু কোনোভাবেই দুগ্ধজাত কাজ করেন না। তিনি আরও জানান, প্রেম সিং একজন সরকারি কর্মচারী। কিন্তু সঞ্জু একজন গৃহবধূ যিনি সর্বদা গরুর যত্নে নিযুক্ত থাকেন। পাশাপাশি, আরও জানা গিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই এই পরিবারগুলি তাঁদের একটি বাড়ি বিক্রি করে গবাদি পশুগুলির জন্য একটি বড় জায়গা নিতে চলেছেন, যাতে গরুর পাশাপাশি অন্যান্য বাছুর এবং ষাঁড়ও ভালোভাবে থাকতে পারে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর