বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একটা সময় ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনায় গমগম করতো গোটা স্কুল। কিন্তু বর্তমানে সেই সরকারি স্কুলেরই (Government School) অবস্থা খুব শোচনীয়। মাত্র একজন পড়ুয়া আর একমাত্র শিক্ষিকাকে নিয়ে কোন রকমে টিকে আছে এই সরকারি স্কুলটি। বিগত কয়েক দিনে পশ্চিমবঙ্গের বেহাল শিক্ষা পরিকাঠামো বিশেষ করে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে অস্বাভাবিক হারে ছাত্র সংখ্যা কমতে থাকায় তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দপ্তর।
সরকারি স্কুলে (Government School) মাত্র একজন পড়ুয়া আর একজন শিক্ষিকা
বাংলায় শুধু নয়, কয়েক বছরে উদ্বেগজনকভাবে স্কুলছুটদের সংখ্যা বেড়েছে দেশের একাধিক রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে (Government School)। তবে সম্প্রতি সরকারি স্কুলের বেহাল দশার যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তা বাংলার নয়,বরং অন্য রাজ্যের। কথা হচ্ছে, তেলেঙ্গানার একটি সরকারি স্কুলের বিষয়ে। যেখানে মাত্র একজন শিক্ষিকা আর একজন পড়ুয়াকে নিয়েই দিব্যি চলছে স্কুল। তেলেঙ্গানার ছোট্ট প্রত্যন্ত গ্রাম নড়াপাণিনিপল্লীর ওই সরকারি স্কুলের ছাত্রী কীর্তনার বয়স এখন মাত্র নয় বছর।
স্কুলের (Government School) একমাত্র শিক্ষিকা উমা, রোজ শুধু কীর্তনাকে পড়াতেই স্কুলে আসেন। কীর্তনা সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাকে তার বাবা বলেছে একবার স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে, দ্বিতীয়বার খোলা খুবই কঠিন হবে। এই কারণেই এই স্কুলেই তাকে পড়ার নির্দেশ দিয়েছে তিনি। বাবার কথা মতোই কীর্তনা ঠিক করেছে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত সে এই স্কুলেই পড়াশোনা করবে। এরপর সেকেন্ডারি স্কুলে ভর্তির জন্য কোন হোস্টেলে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা আছে তার।
একমাত্র শিক্ষিকা উমা জানিয়েছেন, স্কুলে (Government School) দশ জন ছাত্র-ছাত্রী থাক অথবা একজন যেমন পড়ুয়া থাকুক না কেন পড়াশোনোতে কোন বদল হবে না। তবে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন কম ছাত্রছাত্রী থাকলে চাপ অনেকটাই কম থাকে। জেলার এডুকেশন অফিসার এ প্রসঙ্গে পিটিআই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন এই স্কুলের একমাত্র ছাত্রী চতুর্থ শ্রেণীতে পঠরত। যাতে পড়াশোনায় বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য সে ওয়াইরা মণ্ডলে উচ্চ প্রাথমিকে ভর্তি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলার বাড়ি তৈরি হবে আরও সহজ! বড় আপডেট দিল পঞ্চায়েত দপ্তর
তেলেঙ্গনার ওই ছাত্রীর কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর উঠে এসেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই মেয়েটির বাবার এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছেন। আবার কেউ তাকে একাধারে বলছেন ভাগ্যবান এবং দুর্ভাগ্যবান। কারণ একদিকে তিনি যেমন তার মেয়ের জন্য গোটা স্কুলে একমাত্র শিক্ষিকা পেয়েছেন,তেমনি অন্যদিকে সহপাঠীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ওই শিশুর সার্বিক বিকাশ ঘটছে না।
জানা যাচ্ছে বছরে ওই স্কুলটির পিছনে খরচ হয় ১২ লক্ষ টাকা। আজ ওই স্কুলের পড়ুয়াদের সংখ্যা তলানিতে ঠেকলেও একটা সময় ১৫ বছর আগেও ওই স্কুলেই ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল। ধীরে ধীরে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চাহিদা বাড়ায় ওই স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা কমতে থাকে। তবে পড়ুয়াদের এই স্কুলের পড়াশুনার প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য ‘উই ক্যান লার্ন’ নাম একটি অভিনব প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। সেখানে ইংরেজি ও কমিউনিকেশন স্কিল বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হবে। স্কুলের পড়ুয়াদের জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নজর দেওয়া হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও। এর ফলে আগামীদিনে পড়ুয়াদের ভর্তির ওপর বড় প্রভাব পড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।