প্রিন্সিপাল নিজেই করেন সাফাইয়ের কাজ! এই সরকারি স্কুল টক্কর দেবে নামীদামী বেসরকারি স্কুলকেও

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে সরকারি স্কুলগুলি (Government School) প্রায়শই বিভিন্ন কারণে একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। কখনও ঠিকঠাক পড়াশোনা না হওয়া আবার কখনও মিড-ডে মিলের অস্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া এইসব বিষয়গুলির জেরেই বারংবার খবরের শিরোনামে উঠে আসে স্কুলগুলি। যার ফলে সার্বিকভাবে এই স্কুল সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয় অভিভাবকদের মধ্যে। এমনকি, অনেকেই তাঁদের সন্তানকে বেসরকারি স্কুলগুলিতেও ভর্তি করে দেন। কিন্তু, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একটি স্কুলের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যেটি সম্পর্কে জেনে অবাক হবেন সকলেই।

মূলত, গুজরাটে অবস্থিত ওই স্কুলের একাধিক সুযোগ-সুবিধা এবং পরিষেবা টক্কর দেবে বেসরকারি স্কুলগুলিকেও। ওই স্কুলে, শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের মত কঠিন বিষয়গুলিকে ভালোভাবে বোঝার জন্য বিশেষ মডেল তৈরি করা হয়। এমনকি স্কুলের প্রিন্সিপাল সবাইকে সচেতন করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও নিজেই করেন।

এই সরকারি স্কুলের কাছে পিছিয়ে যাবে বেসরকারি স্কুল: আমরা যে সরকারি স্কুলের প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত করছি সেটি গুজরাটের রাজকোট জেলার একটি ছোট গ্রামে অবস্থিত। এই স্কুলের প্রিন্সিপাল হলেন গিরিশ বাভালিয়া। যিনি ২০১৮ সাল থেকে ওই স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছেন। জানা গিয়েছে, গিরিশ পড়ুয়াদের বিজ্ঞানের মত কঠিন বিষয়গুলিকে সহজ করে বোঝানোর জন্য এক অনন্য উপায় খুঁজে বার করেছেন। শুধু তাই নয়, আবর্জনাকে কাজে লাগিয়েই তিনি বিভিন্ন মডেলও তৈরি করেছেন। এই মডেলগুলির মাধ্যমে, গিরিশ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ব্যবহারিক শিক্ষা দেন। যার মাধ্যমে কঠিন বিষয়গুলি খুব সহজেই পড়ুয়ারা আয়ত্ত করে নেয়।

প্রিন্সিপাল নিজেই পরিষ্কার করেন স্কুল: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গিরিশ প্রতিদিন প্রত্যেকটি ক্লাস রুমে গিয়ে পড়ুয়াদের পড়াশোনায় সাহায্য করেন। এছাড়া বিদ্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে তিনি নিজেই সাফাইয়ের কাজ করেন। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একটি ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে। যা দেখে সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছেন।

জানা গিয়েছে, এই সরকারি স্কুল চালাতে গিরিশকে একাধিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি, স্কুলের তহবিলে অর্থের অভাবে তিনি স্কুল পরিষ্কার রাখার জন্য ঝাড়ুদারদের দৈনিক বেতনও দিতে পারেন না। এমতাবস্থায়, তিনি, নিজেই স্কুলের ক্লাসরুম, করিডোর সহ বাথরুমও পরিষ্কার করেন। সর্বোপরি, এই কাজের জন্য তাঁকে নির্ধারিত সময়ের ২ ঘন্টা আগেই স্কুলে পৌঁছে যেতে হয়।

এদিকে, গিরিশ সরকারি স্কুলের একজন প্রিন্সিপাল হয়ে এই কাজ করেন বলে তাঁকে বিভিন্ন কটূক্তিও শুনতে হয়। কিন্তু গিরিশ সেইসব কথাকে খুব একটা পাত্তা দেন না। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে, স্কুলটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা তাঁর অবশ্যই কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আরও জানা গিয়েছে, গিরিশ বাভালিয়া তাঁর কর্মজীবনে এখনও একদিনও ছুটি নেননি। পাশাপাশি, তাঁর শিক্ষদানের অভিনব পদ্ধতি আকৃষ্ট করে পড়ুয়াদেরকেও।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X