বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বে (Earth) এমন হাজারও রহস্য রয়েছে যেগুলির সমাধানে বছরে পর বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এমতাবস্থায়, তাঁরা প্রায়শই এমন কিছু আপডেট সামনে আনেন যেগুলি চমকে দেয় প্রত্যেককেই। ঠিক সেই রেশ বজায় রেখেই এবার একটি বড় খবর সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে যে, আমাদের পায়ের হাজার হাজার কিলোমিটারের নিচে একটি রিং-আকৃতির এলাকা আবিষ্কৃত হয়েছে। যেটি ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
পৃথিবীর (Earth) কেন্দ্রে মিলল এই অবিশ্বাস্য জিনিস:
উল্লেখ্য যে, এই অঞ্চলটি পৃথিবীর (Earth) তরল কেন্দ্রের মধ্যে অবস্থিত। যা আমাদের গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্রের গতিশীলতা সম্পর্কে নতুন সূত্র প্রদান করেছে। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ANU) বিজ্ঞানীরা এটি আবিষ্কার করেছেন। বিজ্ঞানীরা এটিকে “ডোনাট” আকৃতির হিসাবে বর্ণনা করেছেন। যা আকারে গোলাকার এবং মাঝখানে একটি গর্ত রয়েছে। জানিয়ে রাখি যে, পৃথিবীর তরল কেন্দ্রের কাঠামোটি শুধুমাত্র নিম্ন অক্ষাংশে পাওয়া যায় এবং বিষুব রেখার সমান্তরালে বসে থাকে। ANU-র ভূমিকম্প বিষয়ক বিজ্ঞানীদের মতে, এটি এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
ইতিমধ্যেই সায়েন্স অ্যাডভান্সেস-এ এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে এই চমকপ্রদ আবিষ্কারের তথ্য মিলেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে (Earth) দু’টি মূল স্তর রয়েছে। একটি হল অভ্যন্তরীণ কোর। যা একটি কঠিন স্তর এবং বাইরের কোরটি হল তরল। ম্যান্টেল পৃথিবীর মূলকে ঘিরে রয়েছে। নতুন আবিষ্কৃত রিং-আকৃতির অঞ্চলটি পৃথিবীর বাইরের কোরের শীর্ষে রয়েছে। যেখানে তরল কোরটি ম্যান্টেলের সাথে মিলিত হয়। যে গবেষণা দলটি এই আবিষ্কারটি করেছে তারা বড় বড় ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সিসমিক তরঙ্গ বিশ্লেষণ করেছে।
আরও পড়ুন: গোটা বিশ্ব একাই তোলপাড় করে দেবে আদানি গ্রুপ! হাতে এল এই বড় কোম্পানি, এবারে হবে আসল খেলা
কিভাবে এটি আবিষ্কার করা হয়েছিল: ANU-র জিওফিজিসিস্টের অধ্যাপক হরভোজে তাকালসিকও এই আবিষ্কারের সাথে জড়িত ছিলেন। জানা গিয়েছে, এই তরঙ্গ পৃথিবীর (Earth) মধ্য দিয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা এর অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। অধ্যাপক তাকালসিক বলেন, গবেষকরা কীভাবে তরল কোর এবং ম্যান্টেলের বাইরের অংশের মধ্যে প্রবাহিত ভূমিকম্পের তরঙ্গগুলি ধীর হয়ে যায় তার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। তিনি আরও বলেন, “ওই তরঙ্গের পথ এবং সেখান দিয়ে যেতে যে সময় লেগেছিল তা দেখে আমরা পৃথিবীর বাইরের কোর দিয়ে তরঙ্গের যাত্রাকে আবার তৈরি করেছি।”
কি জানা গিয়েছে: তিনি জানান, “এই তরঙ্গগুলি ধীর হয়ে গেছে। যা বোঝায় যে বাইরের কোরের মধ্যে একটি রিং বা ডোনাট আকৃতির অঞ্চল রয়েছে। যেটি বিষুবরেখার সমান্তরালে কেন্দ্রীভূত ছিল। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর জটিল কাঠামোতে একটি নতুন স্তর প্রকাশ করেছি।” উল্লেখ্য যে, তাৎক্ষণিকভাবে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ করার পরিবর্তে, বিজ্ঞানীরা কম্পনের কয়েক ঘন্টা পরে তরঙ্গের মধ্যে মিল বিশ্লেষণ করেছেন। এই গবেষণার সহ-লেখক ডঃ জিয়াওলং মা বলেছেন যে এই আবিষ্কারটি পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের গতিশীলতার কিছু রহস্যকে প্রকাশ করবে।