বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের রাজ্য তথা দেশে পরিবহণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল রেল পরিষেবা। আর এই পরিষেবার সঙ্গেই যাত্রীদেরকে সংযুক্ত করে রেল স্টেশনগুলি (Rail Station)। যে কারণে স্টেশনগুলির নাম এবং পরিচিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা এমন একটি স্টেশনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যেটি প্রায় ১২ বছর ধরে কার্যত নামহীন অবস্থায় ছিল। শুধু তাই নয়, আমাদের রাজ্যেই রয়েছে সেই স্টেশনটি। মূলত, ওই স্টেশনটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ প্ল্যাটফর্মের বোর্ডে কোনো নাম লেখা ছিল না। যদিও, সম্প্রতি প্রায় এক যুগ পরে নিজের পরিচিতি পেল ওই স্টেশন।
জানা গিয়েছে, “রায়না” এবং “রায়নগর”-এই দু’টি স্থানের নামকে কেন্দ্র করেই বিতর্কের সৃষ্টি হয় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বর্ধমানের ওই স্টেশনটিতে। একটা সময়ে ওই স্টেশনের নাম রাখা হয় রায়নগর। যদিও, স্থানীয়দের দাবি ছিল যে, যেহেতু স্টেশনটি রায়না মৌজায় অবস্থিত তাই সেটির নাম “রায়না” রাখতে হবে। আর সেই দাবিতেই প্ল্যাটফর্মের বোর্ড থেকে নাম মুছে দিয়েছিলেন কিছু স্থানীয় মানুষ। যার ফলে পরিচিতি হারিয়ে ফেলে স্টেশনটি। তবে, এবার নাম ঠিক হল ওই স্টেশনের। যেখানে বহাল রয়েছে পুরোনো “রায়নগর” নামটি।
মাসখানেক আগেই নাম স্থির করা হয়েছে ওই স্টেশনের। পাশাপাশি, প্ল্যাটফর্মের বোর্ডেও ফেরত এসেছে “রায়নগর” নামটি। যদিও, এই বিবাদের মাঝেও যাত্রীদের রায়নগর স্টেশন লেখা টিকিটই দেওয়া হত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পর্যন্ত দূরত্বে প্রথমে ন্যারোগেজ লাইনে ট্রেন চলত। যদিও, ১৯৯৮ সালে রেল কর্তৃপক্ষ এই লাইনটিকে ব্রডগেজ করার পরিকল্পনা নেয়।
মোট তিনটি ধাপে সম্পন্ন হওয়া ওই কাজে প্রথমে বাঁকুড়া থেকে সোনামুখী এবং তারপরে সোনামুখী থেকে রায়নগর এবং একদম শেষে রায়নগর থেকে বর্ধমান-হাওড়া কর্ডলাইনের মশাগ্রাম পর্যন্ত এই লাইন সম্প্রসারণের কাজ করা হয়। পাশাপাশি, ২০০৮ সাল থেকেই রায়নগর পর্যন্ত লাইনে যাত্রী পরিবহণের কাজও শুরু হয়েছিল। যদিও, তখন থেকেই সূত্রপাত হয়েছিল বিতর্কেরও।
এদিকে, এই নাম বিতর্কের প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে এস আনন্দ জানিয়েছেন যে, ‘‘আমাদের কাছে রাজ্য সরকার স্টেশনের নাম বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দি হরফে লিখে পাঠায়। আর সেই নামই লেখা হয় প্ল্যাটফর্মে। এক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া নামই আমরা লিখেছি।’’
যদিও, স্টেশনের নাম “রায়নগর” বহাল থাকার প্রসঙ্গে এখনও জারি রয়েছে প্রতিবাদের আবহ। মূলত, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ স্টেশনটির নাম “রায়না” হিসেবেই চান। পাশাপাশি, রায়না কেন্দ্রের বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা স্টেশনটির নাম রায়না চেয়েছিলাম। কিন্তু ফের তা রায়নগর করা হয়েছে বলে জেনেছি। এমতাবস্থায়, আমরা নাম পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় চিঠি দেব।’’