বাংলা হান্ট ডেস্ক: “গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা!” বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের এই কালজয়ী রচনা সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। পাশাপাশি, কোনো ব্যক্তির গোঁফের (Mustache) বহর দেখে কিংবা তাঁর গোঁফের প্রশংসা করতেও এই লাইনটি ধার করি আমরা। কিন্তু, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন এক ভারতীয় নারীর প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন তাঁর গোঁফের জন্য!
হ্যাঁ, শুনতে অদ্ভুত এবং অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। সর্বোপরি, ওই মহিলা তাঁর গোঁফটিকে নিয়ে গর্বিতও বটে। মূলত, আমরা শৈজার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় ঘটাব। ৩৫ বছর বয়সী এই মহিলা সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় থাকেন। পাশাপাশি, সম্প্রতি তিনি তাঁর একটি ছবি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে দিয়ে লিখেছিলেন, “আমি আমার গোঁফটিকে পছন্দ করি।” এদিকে, শৈজার এই গোঁফ রাখার ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন সকলে। অনেকে তাঁর সাহসের প্রশংসা করলেও কিছুজন আবার শৈজার সমালোচনাও করেছেন।
জানা গিয়েছে, কেরালার দক্ষিণ রাজ্যের কান্নুর জেলার বাসিন্দা শৈজার ঠোঁটের ওপর চুলের আধিক্য ছিল। এমতাবস্থায়, তিনি ভ্রুয়ের চুলের পরিচর্যা নিলেও ঠোঁটের ওপরের চুলগুলিকে কখনোই সরিয়ে দেননি। এদিকে, প্রায় বছর পাঁচেক আগে, তিনি বুঝতে পারেন যে ওই চুলগুলি গোঁফের মতো ঘন হতে শুরু করেছে। এই ঘটনায় তিনি আনন্দিত হন এবং এটি রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
পাশাপাশি, তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, “আমি এখন এটি ছাড়া বেঁচে থাকার কল্পনাও করতে পারি না। যখন করোনা মহামারী শুরু হয়েছিল, আমি সব সময় মাস্ক পরা অপছন্দ করতাম। কারণ এটি আমার মুখ ঢেকে রাখত।” এদিকে, তাঁর এই সিদ্ধান্তের জেরে অনেকেই শৈজাকে সেটি কেটে ফেলার পরামর্শ দেন। যদিও, তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অবিচল থাকেন। এদিকে, শৈজার পরিবার এবং তাঁর নিকট বন্ধুরা এই গোঁফের সমর্থন করেছেন। পাশাপাশি, তাঁর মেয়েও এটিকে পছন্দ করে। যদিও, পথচলতি সাধারণ মানুষরা তাঁকে বাঁকা চোখে দেখতে থাকেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, শৈজা বিগত বছরগুলিতে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগেছেন। সর্বোপরি, তাঁর ছয়টি বড় অস্ত্রোপচারও হয়েছে। এমতাবস্থায়, তিনি জানান, “যতবার আমি অস্ত্রোপচার থেকে বেরিয়ে এসেছি, আমি আশা করতাম যে আমাকে আর কখনও অপারেশন থিয়েটারে যেতে হবে না।” এছাড়াও, তিনি জানান, “আমি কখনই অনুভব করিনি যে আমি সুন্দর নই। অনেকে অনেক কথা বলেন কিন্তু আমার যদি দু’টি জীবন থাকত, তাহলে হয়তো আমি অন্যদের মত করে একটা জীবন কাটাতাম।”
জানিয়ে রাখি, সাম্প্রতিক সময়ে, একাধিক মহিলা তাঁদের মুখের মধ্যে থাকা চুলের উপস্থিতিকে মেনে নিয়ে সেভাবেই সৌন্দর্যে মেতে উঠছেন। ২০১৬ সালে, হারনাম কৌর দাড়ি রাখার জন্য বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ মহিলা হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেন। এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে হারনাম জানান, তাঁর এই সিদ্ধান্তের জেরে তাঁকে তিরস্কারের মুখে পড়তে হয়েছিল। আর সেখান থেকেই তাঁর নিজের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়।