বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশ ভারতবর্ষ (India) হল একটি নদীমাতৃক দেশ। একদম ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে এই প্রসঙ্গে পড়ে এসেছি আমরা। এদিকে, হিন্দু ধর্মে নদীকে “মা” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই কারণেই ভারতে পবিত্র নদীগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মূলত, হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থে একাধিক নদীর উল্লেখ থাকলেও মা যমুনা ও মা গঙ্গার স্থান সবথেকে শীর্ষে রয়েছে। পাশাপাশি, এই নদীগুলির অত্যন্ত প্রাচীন ইতিহাসও রয়েছে।
তবে, যমুনা এবং গঙ্গার আগে আরও একটি নদী প্রবাহিত হত। যেটিকে ভারতের প্রথম নদী হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এই প্রসঙ্গে জ্যোতিষী বিশেষজ্ঞ ড. রাধাকান্ত ভাতস ওই নদী এবং সেটির সাথে জড়িত অভিশাপ ও কাহিনির পাশাপাশি হিন্দুধর্মে সেটির গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করেছেন। বর্তমান প্ৰতিবেদনে তারই অবতারণা করা হল।
উল্লেখ্য যে, ভগীরথের কঠোর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে মা গঙ্গা স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে এসেছিলেন। কিন্তু গঙ্গার আগেও ভারতে একটি নদী থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। ওই প্রমাণ অনুসারে, গঙ্গার আগে সরস্বতী নদী পৃথিবীতে প্রবাহিত হত। সরস্বতী নদী মা সরস্বতীর পদ্ম থেকে বের হয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে।
এদিকে, বেদে সরস্বতী নদীকে মা সরস্বতীর রূপ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছে। যদিও পরে সরস্বতী নদী ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যায়। মনে করা হয় যে, সরস্বতী নদীর অন্তর্ধানের পিছনে একটি অভিশাপ ছিল। যিনি সরস্বতী নদীকে অভিশাপ দিয়েছিলেন তিনি হলেন মহর্ষি দূর্বাসা। মূলত, মহাভারতের যুদ্ধ হয়েছিল সরস্বতী নদীর তীরে। এই ভয়াবহ যুদ্ধে সামিল হওয়া যোদ্ধাদের রক্ত সরস্বতী নদীতে মিশে যেত।
একবার ঋষি দূর্বাসা পূজা করতে সরস্বতী নদীর তীরে পৌঁছন। সেইসময়ে নদীতে রক্ত দেখে তাঁর পূজা ভঙ্গ হয়ে যাওয়ায় তিনি ক্রুদ্ধ হন। তখন তিনি সরস্বতী নদীকে বিলীন হওয়ার অভিশাপ দেন। পুরাণ অনুযায়ী, সরস্বতী নদী এখনও ভূগর্ভস্থ ভাবে প্রবাহিত হয়। এদিকে, অনেক গবেষণায় মাটির নিচে প্রবাহিত সরস্বতী নদীর প্রমাণ পাওয়া গেছে। পুরাণে লেখা আছে যে, কল্কি অবতারের সময়ে সরস্বতী নদী ফের আবির্ভূত হবে। তাই এটাই হল ভারতের প্রথম নদী, যা আজও অভিশাপ ভোগ করছে।