বাংলা হান্ট ডেস্ক: পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সকলের মনে কৌতূহলের শেষ নেই। আসলে এই গোটা পৃথিবীটা এমনই রহস্যময় যে প্রশ্ন আপনা আপনি মাথায় চলে আসে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত প্রশ্নটি হচ্ছে পৃথিবীর শেষ রাস্তা (Last Road) কোনটি? হামেশাই অনেকের মনে এই প্রশ্ন উঁকি দেয়। এই এত বড় ভূখণ্ড, যেখানে রয়েছে ১৯৫ টি দেশ। কিন্তু সেখানে শেষ রাস্তা থাকবে না সেটা কি হতে পারে? আজকের প্রতিবেদনে জানাবো দুনিয়ার শেষ সীমান্ত কোনটি।
পৃথিবীর শেষ রাস্তা (Last Road) কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছে?
পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঘুরে বেড়ান ভ্রমণ পিপাসুরা। কিন্তু এখনো ভাগ্য হয়নি পৃথিবীর শেষ রাস্তায় (Last Road) পৌঁছনোর। বলা হয় এই রাস্তায় একা যেতে নেই। নইলে ভয়ংকর বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। এখানকার রাস্তা এতটাই প্রতিকূল যে এখানে পৌঁছালে আর বাড়ি ফিরতে হবে না। ভূবিজ্ঞানীরা দুনিয়া শেষ সীমান্তের খোঁজ দিয়েছেন, আর সেটি হচ্ছে নরওয়ে (Norway)। এই সীমান্তের পর আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। এক পা এগোলেই সোজা পৌঁছবেন যমের দুয়ার।
কেন এই জায়গাটিকে পৃথিবীর শেষ রাস্তা বলা হয়: মূলত এই জায়গাটির নাম “ই-৬৯ হাইওয়ে”, এটি অবস্থিত নরওয়ে, অর্থাৎ নিরক্ষরেখার উপরের দিকে। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এটি পশ্চিম ইউরোপের উত্তরের স্থান। এই রাস্তাটি উত্তর ক্যাপকে সংযুক্ত করেছে। এই হাইওয়ের রাস্তা প্রায় ১২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ৷ এই সড়কের মাঝখানে রয়েছে ৫টি টানেল। এটি নরওয়ের শেষ প্রান্ত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই এই সড়কের সামনে কোন রাস্তা নেই। তবে জানা গিয়েছে এই রাস্তায় যাওয়া একা নিষিদ্ধ।
কেন এই রাস্তায় যাওয়া নিষিদ্ধ: পৃথিবীর শেষ রাস্তার (Last Road) খোঁজ পাওয়ার পর অনেকেরই ইচ্ছে হবে এখান দিয়ে যাওয়ার। কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখি, এই রাস্তায় যাওয়ার আগে বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলতে হয়। প্রথমত এখানে একা যাওয়ার অনুমতি নেই গেলে একমাত্র দলের সঙ্গেই যাওয়া যেতে পারে নইলে হারিয়ে যেতে পারেন। এই রাস্তা ধরে হাঁটলে দূর দূরান্ত অবধি শুধু বরফ আর সমুদ্র দেখা যায়। তবে এখানে যে কারণে সব থেকে বেশি সমস্যার মুখে পড়তে হয় তা হচ্ছে আবহাওয়া।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ বয়কটই হয়ে দাঁড়ালো কাল! ধর্মান্ধতার জেরে সঙ্কটে মুসলিম ব্যবসায়ীরা
এখানকার আবহাওয়া এতটাই অদ্ভুত যে এখানে মানুষের গাড়ি চালানো তো দূর হাঁটাও দুষ্কর। শুধু তাই নয় এখানে গ্রীষ্মকালেও বরফ বৃষ্টি, ঝড় তুফান লেগেই থাকে। শীতকালে তুষারপাতের কারণে এখানকার রাস্তা দু থেকে তিন ঘন্টার বেশি আটকাই পড়ে থাকে। এখানকার রাস্তা অত্যন্ত সঙ্কুল, তাই এখানে একা যাওয়া নিষেধ। যদিও নরওয়ের ভূ-প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম। তবে এখানে ৬ মাস শুধু অন্ধকার থাকে। আসলে এখানে শীতের সময় সূর্য বের হয় না। ফলে ৬ মাস গোটা এলাকা অন্ধকারে ডুবে থাকে। আবার গ্রীষ্মকালে ৬ মাস সূর্য দেখা যায়। এমনই ভূ-প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরা নরওয়ে।
এই রাস্তা তৈরীর পরিকল্পনা: পৃথিবীর শেষ রাস্তাটির (Last Road) উন্নয়ন শুরু হয় ১৯৩০ সালে। এরপর ১৯৩৪ সালে এই জনশূন্য স্থানটিকে পর্যটকদের উপযোগী করে তোলার জন্য বিভিন্নরকম ভাবে উন্নয়ন চলতে থাকে। বর্তমানে এখানে রেস্তোরাঁ এবং স্যুভেনির শপও খোলা হয়েছে। এছাড়াও জানা গিয়েছে ১৯৯৯ সালে জুন মাসে এই রাস্তাটি নির্মিত হয়েছিল। তার আগে এখানে পায়ে হেঁটে যাওয়ার কোন ব্যবস্থা ছিল না, নৌকায় ছিল ভরসা। বর্তমানে এটি এখন পর্যটন উপযোগী কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর এখানে বহু মানুষ ঘুরতে আসেন।