তৈরি হয়ে গেল ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মূর্তি, বানাতে খরচ ১৪০০ কোটি টাকা, ব্যবহার হয়েছে ১২০ কেজি সোনা

Last Updated:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমরা সকলেই জানি যে, ধ্যানমগ্ন অবস্থায় গৌতম বুদ্ধের বিশ্বের বৃহত্তম মূর্তি রয়েছে থাইল্যান্ডে। উচ্চতার নিরিখে এটি ৩০২ ফুট উঁচু। এবার, সেই তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে জায়গা করে নিল স্বামী রামানুজাচার্যের ২১৬ ফুট উঁচু মূর্তিটি। যদিও রাজস্থানের নাথদ্বারায় ৩৫১ ফুট উঁচু শিব মূর্তি তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেটির উদ্বোধন মার্চে। তার আগে ফেব্রুয়ারিতে রামানুজাচার্যের মূর্তিটি উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এই মূর্তিটির পাশাপাশি আরও ১০৮ টি মন্দির তৈরি করা হয়েছে, যেগুলির কারুকার্য এমন যে কয়েক মিনিটের জন্য অবাক করে দেয় সকলকেই। এছাড়াও ১২০ কেজি সোনা ব্যবহার করে আচার্যের একটি ছোট মূর্তিও তৈরি করা হয়েছে। তেলেঙ্গানার বৃহৎ এই মূর্তিটির নাম দেওয়া হয়েছে “স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি”। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সাধু চিন্না জিয়ার স্বামীর তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ১৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই বছর থেকে এটি দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।

বৃহদাকার এই মূর্তিটি তৈরির জন্য প্রথমে ১৪ টি মাটির মূর্তি তৈরি করা হয়। তারপর সেখান থেকে চারটি মূর্তি বেছে নিয়ে একটি চূড়ান্ত মূর্তি বানানো হয়। পাশাপাশি, মূর্তিটি ঠিক কি রকম হবে তা নিয়ে ব্যাঙ্গালোরে একটি থ্রি-ডি মডেল বানানো হয়। তারপরে একটি নির্মাণ সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়।

মূর্তিটির উচ্চতা ১০৮ ফুট, মূর্তি সহ মোট স্ট্যাচুটির উচ্চতা ২১৬ ফুট, মূর্তিটি যে পদ্মের আসনে বসে রয়েছে সেটির উচ্চতা ২৭ ফুট। যার মধ্যে পদ্মের পাঁপড়ি রয়েছে ৫৪ টি। পাশাপাশি, সিঁড়ি রয়েছে মোট ১০৮ টি এবং মোট ৩৬ টি হাতি বানানো হয়েছে। মূর্তির হাতে যে দন্ডটি রয়েছে তার উচ্চতা ১৩৫ ফুট। তবে, এইভাবে এগুলি বানানোর পেছনে একটি কারণও রয়েছে!

সমস্ত সংখ্যাগুলিকে যোগ করলে দেখা যাচ্ছে যে প্রত্যেকরই যোগফল হচ্ছে “৯”, যেহেতু এই সংখ্যাটিকে একটি “শাশ্বত সংখ্যা” হিসেবে ধরা হয় তাই মূর্তি এবং মন্দিরের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেটির ব্যবহার চোখে পড়ে।

এই প্রসঙ্গে সাধু চিন্না জিয়া স্বামী জানান যে, আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগে চেন্নাইয়ের শ্রী পেরম্বিদুরের কাছে অবতার রূপে জন্মগ্রহণ করেন স্বামী রামানুজাচার্য। প্রায় ১২০ বছর বেঁচেছিলেন তিনি। তাঁর ভাবধারা এবং জীবনীকে ফুটিয়ে তুলতেই এই মূর্তি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে, বিজ্ঞানের সাথে সাথে তাল মিলিয়েই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। মূর্তি তৈরিতে তামা, দস্তা, রূপো, সোনা এবং টিনের ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও, মন্দির নির্মাণে লোহা, ইস্পাত এবং স্টিলের প্রয়োগও করা হয়েছে।

প্রায় ৪৫ একরের এই বিরাট প্রাঙ্গণে স্বামী রামানুজাচার্যের মন্দিরের পাশাপাশি, বিষ্ণুরও ১০৮ টি মন্দির তৈরি হচ্ছে। একদিনে প্রায় তিরিশ হাজার ভক্ত দর্শন করতে পারবেন এই মন্দির।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X