বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান যুগে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষের চিন্তাধারাও বদলাতে শুরু করেছে। এমতাবস্থায়, এই পরিবর্তনশীল চিন্তাধারার ওপর ভর করেই দেশজুড়ে বিভিন্ন নিত্যনতুন স্টার্টআপেরও (Startup) সন্ধান মিলছে। সেই রেশ বজায় রেখে এবার এমনই এক স্টার্টআপের প্রসঙ্গ উঠে এল রাজস্থানের (Rajasthan) কোটা শহর থেকে। সেখানে Gobarwala.com নামে একটি স্টার্টআপ সেখানকার কৃষি মহোৎসবে প্রচুর মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।
গোবর থেকে তৈরি করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, IIT-র প্রাক্তনী সত্যপ্রকাশ ভার্মা শুরু করেন এই অভিনব স্টার্টআপটি। পাশাপাশি, সত্যপ্রকাশ দাবি করেছেন যে, তিনি DRDO-র সহযোগিতায় সৈন্যদের জন্য এই বিশেষ ইউনিফর্ম তৈরি করেছেন। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হল, এই ইউনিফর্মটি গোবর থেকে নিষ্কাশিত ন্যানো সেলুলোজ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, দাবি করা হয়েছে যে, এই ইউনিফর্ম সৈন্যদের জন্য খুবই উপকারী হবে।
আঘাতের পর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করবে: সত্যপ্রকাশ ভার্মার মতে, গোবরের সাহায্যে তৈরি এই ইউনিফর্ম মরুভূমিতে সৈন্যদের শীতলতা প্রদান করবে। সর্বোপরি, এই ইউনিফর্ম আঘাত লাগার পর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করবে। এছাড়াও, এই বিশেষ ইউনিফর্মটিকে ব্যবহারের পর সেটিকে সার হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে সত্যপ্রকাশ ভার্মা জানিয়েছেন, তাঁরা গোবর থেকে আলফা এবং ন্যানো সেলুলোজ তৈরি করেন। যা হল এক ধরণের ন্যানো ফাইবার। এই ফাইবার থেকে ন্যানো টেক্সটাইল তৈরি করা হয়। আর সেগুলি থেকেই ইউনিফর্ম তৈরি করা যায়। পাশাপাশি, জানা গিয়েছে গোবর থেকে তৈরি এই ইউনিফর্ম ওজনেও অনেক হালকা। এছাড়াও, ন্যানো ব্যাকটেরিয়াল উপাদানযুক্ত এই ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কোনো কারণে সৈনিক আহত হলে সেটি ব্যান্ডেজ হিসেবেও কাজ করবে।
বিদেশের চাকরি ছেড়ে স্টার্টআপ শুরু করেন: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সত্যপ্রকাশ ভার্মা হলেন কোটার বাসিন্দা। তিনি জানান যে, ২০০৩ সালে তিনি আইআইটি বোম্বে থেকে বি.টেক করেন। এরপর ২০০৭ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। ডিগ্রি পাওয়ার পর দুবাইয়ের একটি বহুজাতিক তেল কোম্পানিতে চাকরিও পেয়েছিলেন সত্যপ্রকাশ। কিন্তু সেখানে তাঁর কাজ করতে ভালো লাগেনি। এরপর তিনি ভারতে ফিরে আসেন।
দেশে ফিরে তিনি গরু, ছাগল, মহিষ ও শূকরের বর্জ্য পদার্থ নিয়ে গবেষণা করেন। এমতাবস্থায়, সেই কাজে সফল হওয়ার পর তিনি Gobarwala.com নামে নিজের স্টার্টআপ শুরু করেন। পাশাপাশি, সত্যপ্রকাশ ভার্মা দাবি করেছেন যে, তাঁর সংস্থাই বিশ্বের প্রথম এমন সংস্থা, যারা গোবর থেকে ন্যানো সেলুলোজ নিষ্কাশনের পেটেন্ট করিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে, গোবর থেকে তৈরি পণ্যের চাহিদা ভারতের পাশাপাশি ইউরোপ ও কানাডাতেও রয়েছে।