বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার এক অলৌকিক পুকুরের প্রসঙ্গ সামনে এল আমাদের রাজ্যে। মূলত, কলকাতা (Kolkata) থেকে মাত্র তিরিশ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে বাগনানের (Bagnan) বাঁটুল গ্রামটি। আর সেইখানেই রয়েছে ওই বিষ্ময়কর পুকুর। এদিকে, গ্রামের নামের পাশাপাশি ওই পুকুরের নামেও রয়েছে চমক। জানা গিয়েছে, ওই পুকুরে ডুব দিলেই শীর্ণকায় ব্যক্তি হয়ে যান স্বাস্থ্যবান। আর সেই কারণেই পুকুরটি “মোটা পুকুর” নামেই সর্বত্র পরিচিত।
এছাড়াও, ওই পুকুরে স্নান করলে নানা রোগ মুক্তিও ঘটে বলে জানা গিয়েছে। যার ফলে হাওড়া ও তার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে এই পুকুরে স্নান করতে ভিড় জমান বহু মানুষ। পাশাপাশি, ওই পুকুরে ডুব দিয়ে ভক্তরা তার পাশেই থাকা চন্ডী মন্দিরে নিজেরাই পুজো দেন। আর এভাবেই বছরের পর বছর ধরে মনস্কামনা পূরণ হয়ে আসছে ভক্তদের।
জানা গিয়েছে, একসময়ে ওই পুকুরে বিশাল আয়তনের ঝিল ছিল। পাশাপাশি, সেই ঝিল ঢেকে থাকত পদ্ম ফুলে। এছাড়াও, জলেতে বিশাল আকারের শোল মাছ ঘুরে বেড়াত। এমতাবস্থায়, ভক্তরা বর্তমানে সেখানে স্নানের সময়ে তেল-হলুদ এবং সিঁদুর ও চালের ছোট্ট একটি পুটুলি নিয়ে আসেন। স্নানের আগে পুকুর ঘাটের সামনের পাকুড় গাছে তেল-হলুদ ও সিঁদুর লাগানোর রীতি রয়েছে। তারপর সেই হলুদ কপাল এবং শরীরে স্পর্শ করানোর পর স্নান করেন ভক্তরা।
তারপরেই ভক্তরা পুজো দেন মন্দিরে। রবিবার এবং শুক্লপক্ষতে পুজোর উপকরণ পাওয়া যায় পুকুরঘাট সংলগ্ন জায়গাতেই। ওই দিনগুলোতে মানুষের প্রবল ভিড় পরিলক্ষিত হয়। মনস্কামনা পূরণ হওয়ার পরেও সেখানে পুজো দিতে আসেন ভক্তরা। নিয়ম অনুযায়ী, মোটা পুকুরে স্নান করার পর ওই পুকুরের জল বোতলে কিছুটা সংগ্রহ করে নিয়ে আরও দু’দিন বাড়িতে ওই জল দিয়ে স্নান করতে হয়।
১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের বাগনান লাইব্রেরি মোড় থেকে বাগনান-শ্যামপুর রাজ্য সড়কের বাঁটুল কলতলা থেকে ১০ মিনিটের হাঁটা পথের পরেই মিলবে এই অলৌকিক পুকুর। এদিকে, এই মোটা পুকুরের মালিক হল সরকার পরিবার। সেই পরিবারেরই সদস্য তপন সরকার জানিয়েছেন, “এই পুকুরে স্নানের মাধ্যমে মহিলাদের বিভিন্ন রোগ সেরে যাওয়ার পাশাপাশি শিশুদের রিকেট রোগও সেরে যায়। এছাড়াও, ভক্তদের অন্যান্য মনস্কামনাও পূরণ হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে মানুষ আসেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই পুকুরে স্নানের জন্য সব ধর্মের মানুষ আসেন এবং চন্ডী মন্দিরে পুজোও দেন।”