অনন্য নিদর্শন! ইতিমধ্যেই ৫ বার কানওয়ার যাত্রা করেছেন এই মুসলিম ব্যক্তি, নিজেকে বলেন শিবভক্ত

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একই সাথে বসবাস করে আসছেন। শুধু তাই নয়, একাধিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সকলে মিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণও করেন। যদিও, বর্তমান সময় দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় উষ্কানীমূলক ঘটনার জেরে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি (Communal Harmony)-র বিষয়টি। ঠিক সেই আবহেই এবার এক নজিরবিহীন ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। যা নিঃসন্দেহে অবাক করবে সকলকেই।

ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে শ্রাবণ মাস। পাশাপাশি, এই মাসেই ভগবান শিবের ভক্তরা কানওয়ার যাত্রা (Kanwar Yatra 2022)-র মাধ্যমে মহাদেবকে খুশি করার চেষ্টা করেন। কাঁধে গঙ্গাজল নিয়ে পায়ে হেঁটে জ্যোতির্লিঙ্গে জল নিবেদন করেন সকলে। এমতাবস্থায়, গত ১৪ জুলাই থেকে শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথে চলতি বছরের কানওয়ার যাত্রাও শুরু হয়েছে। এই আবহেই, এক মুসলিম শিবভক্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যিনি ইতিমধ্যেই ৫ বার কানওয়ার যাত্রা করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি চলতি বছরেও এই যাত্রা করতে চান।

চিনে নিন এই ব্যক্তিকে: মূলত, উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার ভেন্সওয়াল গ্রামের ওই মুসলিম ব্যক্তির নাম হল ওয়াকিল মালিক। যিনি এখনও পর্যন্ত ৫ বার কানওয়ার ভ্রমণ করেছেন। হরিদ্বার থেকে গঙ্গাজল ভর্তি করার পর ওয়াকিল পায়ে হেঁটে বাগপতের মহাদেব মন্দিরে অর্পণ করেন। গত পাঁচ বছর ধরেই এই যাত্রা করছেন তিনি।

ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়: এই প্রসঙ্গে নবভারত টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ওয়াকিল মালিক ইসলামে বিশ্বাসী এবং তাঁর ধর্মের প্রতিও সমানভাবে নিবেদিত। যদিও, তিনি জানান, এই যাত্রার মাধ্যমে তিনি মানুষজনকে বোঝাতে চান, ঈশ্বর এক এবং আমরা মানুষরাই এই পার্থক্য তৈরি করেছি

হয়েছেন বিরোধিতার সম্মুখীন: এদিকে, মালিককে তাঁর এই সফরে বিরোধিতার মুখেও পড়তে হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রথম দিকে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও বিরোধিতা করতেন। আবার অনেকে বলতেন যে, তিনি তাঁর ধর্মের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। যদিও, তিনি সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে এই যাত্রা সম্পন্ন করেন। উল্লেখ্য যে, মালিকের পরিবারে মোট সাতজনের রয়েছেন। স্ত্রী ছাড়াও তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ওয়াকিল দিনমজুরের কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে।

WhatsApp Image 2022 07 17 at 3.51.22 PM

শুধু তাই নয়, তিনি আরও জানান, “আমি মহাদেবকে বিশ্বাস করি। আমার বিগত যাত্রাগুলিতে কোনো সমস্যা হয়নি। আমার গ্রামের উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরাই এটা জানেন।” যদিও, বর্তমান পরিস্থিতির জেরে তিনি ষষ্ঠবারের যাত্রার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অনুমতি নিতে যান। এদিকে, এই প্রসঙ্গে শামলি জেলা প্রশাসনের নোডাল অফিসার অরবিন্দ কুমার বলেছেন যে, দেশে সবার ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। কানওয়ার যাত্রায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে কারও কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর