বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে পাল্টাচ্ছে সবকিছু। তার সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে মানসিকতারও। পাশাপাশি, জীবনযাত্রা থেকে পেশাগত চাহিদা সমস্ত দিকেই বিপুল হারে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়াও, এখন অনেকেই চাকরির পথে না হেঁটে বা চাকরি পেয়েও তা ছেড়ে দিয়ে বিকল্প পথ নির্বাচন করে গভীর পরিশ্রম এবং নিজের ইচ্ছের উপর ভর করে পৌঁছে যাচ্ছেন সফলতার শীর্ষে। আর যা দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বাকিরাও।
পাশাপাশি ওই বিকল্প পথ গুলি নির্বাচন করে তারা করছেন ভাল অঙ্কের রোজগারও। আর যার ফলে যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে তৈরি হচ্ছে নিত্য-নতুন উপার্জনের পথ। বর্তমান প্রতিবেদনেও আজ আমরা এমন এক জনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি চাকরি ছেড়ে দিয়েই এক অভিনব কাজ বেছে নিয়েছিলেন। আর সেটাই মন দিয়ে করে তিনি আজ পেয়েছেন সফলতা।
মূলত, আজ আমরা কর্ণাটকের ৪২ বছর বয়সী শ্রীনিবাস গৌড়ার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যিনি দক্ষিণ কন্নড় জেলার একটি গ্রামে রাজ্যের প্রথম গাধার খামার তৈরি করেছেন এবং গাধা প্রতিপালনও করছেন। জানা গিয়েছে যে, চলতি বছরের ৮ জুন ফার্মটি শুরু করা হয়। শুধু তাই নয়, পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে যে, আপাতত এই ফার্ম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফার্ম হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
কি বলেছেন শ্রীনিবাস:
এই প্রসঙ্গে শ্রীনিবাস জানিয়েছেন যে, মূলত গাধাদের দুর্দশা দেখেই কিছু করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। আর তারপরেই তিনি এই কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। মূলত, যে গাধাগুলিকে প্রায়ই ছেড়ে দেওয়া হত সেইরকম গাধাগুলিকে সাহায্যের জন্যই তিনি এই কাজ শুরু করেন। এদিকে, জানা গিয়েছে শ্রীনিবাসের ফার্মটিতে ইতিমধ্যেই খরগোশ এবং কড়কনাথ মুরগির বংশবৃদ্ধি নিয়ে কাজ করা হয়। আপাতত সেখানেই এখন ২০ টি গাধা রয়েছে৷
শ্রীনিবাসের শিক্ষাগত যোগ্যতা:
বর্তমানে পশুপালন করলেও শ্রীনিবাস গৌড়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা জানলে অবাক হবেন যে কেউই। তিনি একজন বিএ স্নাতক। পাশাপাশি, শ্রীনিবাস একটি সফ্টওয়্যার কোম্পানিতে চাকরিও করতেন। কিন্তু, সেই চাকরি ছেড়ে দিয়েই তিনি ২০২০ সালে ইরা গ্রামে ২.৩ একর জমিতে ফার্ম সহ পশুপালন, পশুচিকিৎসা পরিষেবা, পশুখাদ্য উন্নয়ন কেন্দ্রের পাশাপাশি, প্রশিক্ষণও দিতে থাকেন।
তাঁর লক্ষ্য কি?
ইতিমধ্যেই শ্রীনিবাস জানিয়েছেন, তিনি যখন প্রথমে এই কাজ শুরু করেছিলেন তখন অনেকেই এই উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন তির্যক মন্তব্য করেছিলেন। এমনকি, অনেকে বিভিন্ন প্রশ্নও করেছিলেন। যদিও, সেসবকে পাত্তা না দিয়েই তিনি লেগে থাকেন তাঁর কাজে। পাশাপাশি, শ্রীনিবাস আরও জানিয়েছেন এখন ওয়াশিং মেশিন সহ বিভিন্ন যন্ত্র চলে আসায় ধোপারা আর গাধা ব্যবহার করেন না বললেই চলে। এমতাবস্থায়, গাধার প্রতিপালনও অনেক কমে গিয়েছে।
এছাড়াও, তিনি জানিয়েছেন, গাধার দুধ অত্যন্ত সুস্বাদু, দামি এবং স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভালো। আপাতত, শ্রীনিবাসের লক্ষ্য হল প্যাকেটে করে সবার কাছে গাধার দুধ সরবরাহ করা। পাশাপাশি, তিনি বলেছেন, একটি ৩০ml দুধের প্যাকেটের দাম হবে ১৫০ টাকা। যা মল, দোকান এবং সুপারমার্কেটে পাওয়া যাবে। সর্বোপরি, ইতিমধ্যেই তিনি ১৭ লক্ষ টাকার অর্ডারও পেয়েছেন। যার ফলে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, গাধার দুধের চাহিদা বাজারে যথেষ্ট রয়েছে। আর এই চাহিদাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন শ্রীনিবাস।