সরকারের পর ভারতের সবথেকে বড় জমিদার! এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হল দেশের ১৭ কোটি একর জমির মালিক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: স্বাধীনতার পর দেশে ধীরে ধীরে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার সাথে সাথে অধিকাংশ চাষযোগ্য জমি তাদের দখলে চলে যায়। এর পাশাপাশি চাষযোগ্য নয় এমন জমিও সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এছাড়াও, বিপুল পরিমাণ জমি কিছু প্রতিষ্ঠান বা পরিবারের কাছে থেকে যায়। যার মধ্যে অন্যতম হল ক্যাথলিক চার্চ অফ ইন্ডিয়া (Catholic Church Of India)।

এমতাবস্থায়, সম্প্রতি একটি অবাক করা বিষয় সামনে এসেছে। যেটি জানার পর রীতিমতো চমকে যাবেন সকলেই। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ক্যাথলিক চার্চ অফ ইন্ডিয়া (Catholic Church Of India) বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমির মালিক। ইতিমধ্যেই কিছু রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মোট ৭ কোটি হেক্টর (১৭.২৯ কোটি একর) জমি রয়েছে।

পাশাপাশি, ওইসব জমিতে স্কুল, কলেজ, গির্জার মতো একাধিক ক্ষেত্র নির্মিত হয়েছে। যেগুলির সর্বমোট মূল্য হল প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ক্যাথলিক চার্চ অফ ইন্ডিয়া ভারতে কর্মসংস্থান প্রদানকারী বৃহত্তম বেসরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই প্রতিষ্ঠানের জমি রয়েছে। যেগুলি গোয়া থেকে শুরু করে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতেও বিস্তৃত রয়েছে।

এমতাবস্থায়, ২০১২ সালে প্রকাশিত টেলিগ্রাফের একটি রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, ক্যাথলিক চার্চ অফ ইন্ডিয়ার দেশে ২,৪৫৭ টি হাসপাতাল ডিসপেনসারি, ২৪০ টি মেডিকেল বা নার্সিং কলেজ, ২৮ টি সাধারণ কলেজ, ৫ টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ৩,৭৬৫ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭,৩১৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩,১৮৭ টি নার্সারি স্কুল রয়েছে।

এদিকে, ১৯২৭ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসন দ্বারা ভারতীয় চার্চ আইন প্রণয়ন হয়েছিল। এর আওতায় অতি সুলভ মূল্যে এইসব গির্জাকে জমি লিজ দেওয়া হয়। এই কারণে, ক্যাথলিক চার্চ সমগ্র ভারতে জমি একত্র করে সেগুলিকে বিভিন্ন দাতব্য কাজে এবং খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য ব্যবহার করে। তবে এসব জমির বৈধতার বিষয়টি এখন বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।

9

কারণ ১৯৬৫ সালে ভারত সরকার একটি সার্কুলার জারি করেছিল যে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক লিজ দেওয়া জমিগুলি স্বীকৃত হবে না। তবে এই সার্কুলার বাস্তবায়নে শিথিলতার কারণে ওইসব জমির বৈধতা সংক্রান্ত বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো ফল পাওয়া যায়নি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যাথলিক সম্প্রদায় নিজেই এই সম্পত্তি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য যে, ক্যাথলিক চার্চের গভর্নিং বডি হল CBCI (ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়া)। এটি খ্রিস্টানদের সবথেকে বড় ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অধীনে রয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর