বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতিটি ক্লাসেই বিভিন্ন মেধার পড়ুয়া উপস্থিত থাকে। যাদের মধ্যে কেউ কেউ হয় পড়াশোনায় তুখোড়, আবার কেউ কেউ একটু পিছিয়ে পড়ে। এমনকি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তথাকথিত “পিছিয়ে” পড়া পড়ুয়াদের কপালে জোটে বিদ্রুপ এবং অসহযোগিতা। যা তৈরি করে মানসিক চাপও। শুধু তাই নয়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা একজন পড়ুয়ার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি পড়াশোনায় “কমজোরি” থাকার কারণে তাঁর নাম কাটা গিয়েছিল স্কুল থেকেই! তবে, আজ সেই ছাত্রই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তাঁর ফলাফলের ভিত্তিতে। সর্বোপরি, জয়েন্টের (Joint Entrance Examination) মত কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তিনি ৯৯.৯৩ পার্সেন্টাইল পেয়ে অবাক করে দিয়েছেন সকলকেই।
মূলত, আমরা যে ছাত্রটির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করছি তাঁর নাম হল দীপক প্রজাপতি। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ভোপালের বাসিন্দা দীপক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত দুর্বল ছিলেন তিনি। এমনকি, সেই কারণে প্রাথমিক স্কুল থেকে কেটে দেওয়া হয়েছিল তাঁর নাম। পাশাপাশি, জুটে ছিল উপহাস। সর্বোপরি, বলা হয়েছিল যে দীপক কখনোই উন্নতি করতে পারবেন না। কিন্তু, সময়ের সাথে সাথে বদলেছে পরিস্থিতিও। এখন সমস্ত নিন্দা এবং সমালোচনাকে কার্যত নিজের ফলাফলের ভিত্তিতে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
মূলত, নিজের ওপর ভরসা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন দীপক। ছোটবেলাতে পড়াশোনায় পিছিয়ে থাকলেও দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তিনি হাসিল করেন ৯৬ শতাংশ নম্বর। সেই রেশ বজায় রেখেই দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষাতেও ৯২ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন তিনি। এমতাবস্থায়, তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ইচ্ছে থাকলেও বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থার কথা ভেবে বাবা-মাকে সেকথা জানাতে কুণ্ঠা বোধ করেন দীপক।
যদিও, ছেলের ওই ইচ্ছের কথা আঁচ করতে পেরেছিলেন বাবা-মা। শুধু তাই নয়, আর্থিক দুর্বলতা থাকা সত্বেও ভালো কোচিংয়ের জন্য প্রদীপকে ইন্দোরে পাঠানোর ব্যবস্থাও করেন তাঁরা। এমতাবস্থায়, জয়েন্ট পরীক্ষার ফল বেরোতেই দীপকের এই বিরাট সাফল্য সামনে আসে। জানা গিয়েছে, দীপকের বাবা রাম ইকবাল প্রজাপতি হলেন একজন ঝালাই মিস্ত্রি। পাশাপাশি মা হলেন গৃহবধূ। ছোটবেলায় স্কুল থেকে নাম কাটা যাওয়ার ঘটনাটিই গভীরভাবে নাড়া দেয় দীপককে। এমনকি, ওই ধাক্কাকেই শক্তি বানিয়ে কঠোর পরিশ্রম শুরু করেন তিনি। আর এভাবেই অনন্য নজির স্থাপন করেছেন ওই পড়ুয়া। পাশাপাশি, ছেলের এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত খুশি হয়েছেন দীপকের বাবা-মা।