এবার চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা হচ্ছে টালমাটাল! পরিস্থিতি সামলাতে ডলার বিক্রি জিনপিংয়ের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে বিশ্বের একাধিক দেশ অর্থনৈতিক সঙ্কটের (Economic Crisis) সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান (Pakistan) থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) মতো দেশগুলি। তবে, এবার একটি বড়সড় তথ্য সামনে এসেছে। ইতিমধ্যেই একটি রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে যে, ভারতের আরেক পড়শি দেশ চিনেও (China) নাকি অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চিনা মুদ্রা ইউয়ানের মূল্যও হ্রাস পাচ্ছে বলেও দাবি করা হচ্ছে রয়টার্সের একটি রিপোর্টে।

এমতাবস্থায়, অর্থনীতি সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এদিকে, ওই দেশের এহেন চাঞ্চল্যকর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আভাস মিলতেই স্বাভাবিকভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে যে, অভ্যন্তরীণ বাজারে এবং বহির্বিশ্বে চিনা মুদ্রা ইউয়ানকে রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠছেন জিনপিং।

উল্লেখ্য যে, বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চিনে ১ ডলারের মূল্য ৭.২৫ চিনা ইউয়ানের সমান। আর এই পরিসংখ্যানই ঘুম উড়িয়েছে বেজিংয়ের। কারণ, চিনারা ৭.২৫-কে অর্থনৈতিক মানদণ্ডের সঠিক মাপকাঠি হিসেবে মনে করেন। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই ইউয়ানের মূল্য যদি ডলারের সাপেক্ষে এই মানদণ্ডের চেয়ে নিচে নেমে যায়, সেক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে ভাবে বিষয়টি অর্থনৈতিক সঙ্কটের পরিস্থিতি হিসেবে মনে করা হবে।

এদিকে, রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে অর্থনীতি সামলাতে এবং ইউয়ানের মূল্য হ্রাস আটকানোর চেষ্টার লক্ষ্যে এবার ডলার বিক্রি করে দিচ্ছে বেজিং। পাশাপাশি রয়টার্সের রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে চিনের রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কগুলি বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে ডলার বিক্রি করছে।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির তকমা চিনের কাছেই রয়েছে। যদিও, পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে, চলতি বছরে ইতিমধ্যেই চিনা মুদ্রার মূল্য ডলারের সাপেক্ষে চার শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সময় থাকতে থাকতে পরিস্থিতি সামাল না দিলে আগামী দিনে এত বড় অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করাটাই মুশকিল হয়ে পড়বে।

এদিকে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, চিনের অর্থনৈতিক দুরবস্থার নেপথ্যে করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর প্রধান ভূমিকা রয়েছে। কারণ, মহামারী চলাকালীন দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাণিজ্যিক লেনদেন কমেছে। যার ফলে লাফিয়ে বেড়েছে মূল্যবৃদ্ধি। পাশাপাশি, মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকারের বেশ কিছু নীতি জনবিরোধী হয়ে উঠেছিল বলেও দাবি উঠেছিল। তারই প্রভাব এবার অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে।

This time China's economic situation is not in a good place

যার ফলে এবার ডলার বিক্রির মাধ্যমে চিন তাদের সংগ্রহে থাকা ডলারের সংখ্যা হ্রাস করে নিজেদের মুদ্রার পরিমাণ বৃদ্ধি করার পথে হাঁটছে। আর এই পদক্ষেপের ওপর ভর করেই ইউয়ানের মূল্য বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করছে বেজিং। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বাজারে বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে ইউয়ানের ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়েও নজর দিচ্ছে বেজিং। কারণ, ইউয়ানের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ডলারের প্রয়োজনীয়তা কমবে। আর স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনীয়তা কমলে পড়বে ডলারের দামও।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর