বাংলা হান্ট ডেস্ক: এমনিতেই বর্তমান সময়ে প্রবল অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। ঠিক এই আবহেই এবার পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (International Monetary Fund)। এই প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই IMF পাকিস্তানকে ৪ টি শর্ত দিয়ে জানিয়েছে সেগুলি মেনে চললেই পাকিস্তান ঋণের পরবর্তী কিস্তি পাবে।
এদিকে, পাকিস্তান ঋণ পেতে দেরি করায় এর মধ্যেই ডলারের নিরিখে পাকিস্তানি রুপি রীতিমতো “পাতাল”-এ পৌঁছে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি রুপির দাম ডলারের তুলনায় প্রায় ১৯ টাকা কমেছে। ইতিমধ্যেই এক ডলারের নিরিখে পাকিস্তানি রুপির মূল্য এখন ২৮৪.৮৫ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ঋণ নিয়ে পাকিস্তান সরকার ও IMF-এর মধ্যে চলমান মতপার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ পাওয়া কঠিন বলে মনে হচ্ছে। আর সেই কারণেই পাকিস্তানি রুপি প্রবল চাপের মুখে পড়েছে। এর আগে গত বুধবার পাকিস্তানি রুপি এক ডলারের বিপরীতে ২৬৬.১১ টাকায় লেনদেন হচ্ছিল এদিকে, ইতিমধ্যেই পাকিস্তানি আধিকারিকরা অভিযোগ করেছিলেন যে, IMF তাদের সাথে আধিকারিকদের মত নয়, বরং ভিক্ষুকের মতো আচরণ করছে।
পাকিস্তানে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি: পাকিস্তান বর্তমানে একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যেটি দিয়ে কেবলমাত্র ৩ সপ্তাহ জিনিসপত্র আমদানি করা সম্ভব। এমতাবস্থায়, পাকিস্তানের এখন জরুরি ভিত্তিতে IMF-এর সঙ্গে একটি চুক্তির প্রয়োজন। এই চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান শুধুমাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণের নতুন কিস্তিই পাবে না, পাশাপাশি তারা সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মত অন্যান্য মিত্র দেশগুলি থেকে ঋণের পথও প্রশস্ত করবে। এর আগে, পাকিস্তান আশা করেছিল যে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হয়তো IMF সাথে একটি চুক্তি হতে পারে। তবে তা হয়নি।
মূলত, পাকিস্তান সরকার ঋণের নতুন কিস্তির জন্য IMF-কে রাজি করাতে পারছে না। এমতাবস্থায়, পাকিস্তানে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি গত ফেব্রুয়ারিতে রেকর্ড তৈরি করে সর্বোচ্চ ৩১.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে। যা আগের মাসে ২৭.৬ শতাংশ ছিল। খাদ্য ও পরিবহণ ক্ষেত্রের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই বৃদ্ধি ঘটেছে বলে জানা গেছে। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন, আরিফ হাবিব কর্পোরেশন অনুসারে জানিয়েছে যে, ১৯৬৫ সালের জুলাই থেকে উপলব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে এটাই সর্বোচ্চ সিপিআই বৃদ্ধি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুদ্রাস্ফীতি ১২.২ শতাংশে পৌঁছেছে। এদিকে, বার্ষিক ভিত্তিতে শহর ও গ্রামাঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে যথাক্রমে ২৮.৮২ এবং ৩৫.৫৬ শতাংশ। শুধু তাই নয়, মাসে মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়েছে ৪.৩২ শতাংশ।