বাংলা হান্ট ডেস্ক: বহরমপুরে ছাত্রী খুনের ঘটনায় প্রায় প্রতিদিনই মিলছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে যে, বহরমপুরে মেস ভাড়া করে থেকে সুতপার উপর নজর রাখছিলেন সুশান্ত। যদিও, এই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই আবহেই এবার সুতপার উদ্দেশ্যেই অভিযোগের আঙুল তুললেন সুশান্তের পিসি শান্তি রানি চৌধুরী।
জানা গিয়েছে যে, ছোট থেকেই তাঁর বাড়িতে থাকত সুশান্ত। পাশাপাশি, তাঁর ছেলে না থাকায় রীতিমত সন্তান স্নেহেই তিনি বড় করেছেন সুশান্তকে। এদিকে, সুশান্তের পিসেমশাই চাকরি করতেন পুলিশে। কিন্তু এবার সেই সুশান্তই প্রকাশ্য রাস্তায় ছুরি মেরে নিজের বান্ধবী সুতপাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও, এই অভিযোগ মানতে পারছেন না তাঁর পিসি।
এমনকি, তিনি জানিয়েছেন, “আমার ছেলে ওই মেয়েটির সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছিল। ও ভালোও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, ওই মেয়েটা ওকে যখন তখন ওকে ফোন করে ডেকে নিত। দেখাও করতে বলত। প্রায় ১০ বছর ধরে ওদের সম্পর্কটা ছিল। এমনকি, ওর কাছ থেকে ল্যাপটপটা পর্যন্ত নিয়ে নিয়েছিল।”
মূলত, সুশান্ত যে সুতপাকে খুন করার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে তা কার্যত বিশ্বাসই হচ্ছেনা তাঁর। এর পাশাপাশি, সুতপার বিরুদ্ধেও তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। এমনকি, সুশান্তকে এর আগে একবার মারা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “একবার ক্লাবের ছেলে ডেকে ওকে মার খাইয়েছিল। হয়তো সেই অভিমান থেকেই ছেলেটার রাগ ছিল মনের মধ্যে। ও এই সব থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলেও শেষমেশ পারল না।”
এদিকে, এই ঘটনার পর সুশান্তের বাড়ির অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সুশান্তর বাবা একজন পুলিশ কনস্টেবল। যদিও, ছেলের খুনের ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই আর বাড়িতে ঢোকেননি তিনি। এমনকি, প্রতিবেশীদের বাড়িতেই থাকছেন মা-ও। মূলত, কম্পিউটার সায়েন্সের মেধাবী পড়ুয়া সুশান্ত যে এত নৃশংস কাজ করতে পারে তা ভাবতেও পারেননি কেউই।
এমতাবস্থায়, ভেঙে পড়েছেন সুতপার মা-বাবাও। মেয়েকে হারিয়ে তাঁরা কার্যত শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। সুতপার বাবা জানিয়েছেন, “মেয়ে মেস খরচের টাকা পাঠাতে বলেছিল। তারপরেই কত টাকা লাগবে তা জিজ্ঞাসা করে মেসেজ করেছিলাম। কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি।” পাশাপাশি, সুতপার মা কান্না জড়ানো গলায় জানিয়েছেন, “মেয়েটা পায়েস খেতে খুব ভালোবাসত। শেষবার যখন মেসে ফেরে পায়েসই রেঁধে দিয়েছিলাম।”