বাংলা হান্ট ডেস্ক: এমনিতেই বর্তমান সময়ে ক্রমবর্ধমান করোনা (Corona) পরিস্থিতিতে কার্যত জর্জরিত গোটা দেশ। প্রতিদিনই হাজার হাজার জন আক্রান্ত হচ্ছেন এই মারণ ভাইরাসে। ঠিক সেই আবহেই নতুন করে চিন্তা বাড়িয়ে দাপট দেখাতে শুরু করেছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস (Monkeypox Virus)। এতদিন দেশের মধ্যে শুধুমাত্র কেরালায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেলেও এবার রাজধানী শহর দিল্লিতেও খোঁজ মিলল মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের। এদিকে স্বাভাবিকভাবেই, এই ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে সকলের।
এদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই ঘটনাটিকে নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে দিল্লির মৌলানা আজাদ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির বয়স হল ৩১ বছর। যদিও, তাঁর বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস নেই। তবে, তাঁর শরীরে জ্বর ও ফোসকার মত অংশ দেখা দেওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এমতাবস্থায়, ভারতে এখনও পর্যন্ত মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সংক্রমণের এটি চতুর্থ ঘটনা। যদিও, এটাই একমাত্র ঘটনা যেখানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো ভ্রমণ ইতিহাস নেই। কারণ, পূর্বের তিনটি সংক্রমণের ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণ থেকে ফিরেছিলেন। উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের প্রথম ঘটনা গত ১৪ জুলাই কেরালার কান্নুর থেকে সামনে আসে। এরপর ২২ জুলাই পর্যন্ত মোট তিনজন ব্যক্তির সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। তাঁদের মধ্যে দু’জন সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং আরেকজন থাইল্যান্ড থেকে দেশে এসেছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মাঙ্কিপক্স ভাইরাস বিশ্বের একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই ভাইরাসের এত দ্রুত বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শনিবার বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এমতাবস্থায়, WHO-র এই ঘোষণা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করতে পারে। এছাড়াও, এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিন তৈরির প্রয়োজনীয়তার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়: উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই বিশ্বের ৭৫ টি দেশে ১৬ হাজারেরও বেশি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে চারটি ঘটনা ঘটেছে ভারতে। মূলত, মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সংক্রমিত প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এদিকে, এই ভাইরাসের মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ, সংক্রামক ত্বক বা ক্ষতের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ঘটতে পারে। অর্থাৎ, এটি স্কিন টু স্কিন স্পর্শ এবং ড্রপলেটের সাহায্যে হতে পারে।
এমতাবস্থায়, এখনও অবধি পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে সংক্রমণের প্রধান কারণ হিসাবে যৌন সম্পর্কের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা বিছানাপত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং পোশাকের মতো দূষিত উপকরণ থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে।
রোগের উপসর্গ: এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি হল, মাথাব্যথা, পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা, সারা গায়ে ছোপ ছোপ দাগ, মানসিক অবসাদ, খিঁচুনি এবং জ্বর।