বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Elections 2026) আগে ভূতুড়ে ভোটার ইস্যুতে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই ভোটার তালিকায় ‘ভূত’ ধরতে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই কমিটিতে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী সহ শাসকদলের একাধিক শীর্ষস্তরের নেতা। এই আবহে সামনে এল বিস্ফোরক খবর! দেখা গেল, দু’টি আলাদা পৌরসভার ভোটার তালিকায় রয়েছে এক তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম। এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
তৃণমূল (Trinamool Congress) কাউন্সিলরের পদ বাতিলের দাবি বিরোধীদের!
জানা যাচ্ছে, চাকদহ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সত্যজিৎ বিশ্বাস ওরফে সাধন। তাঁর নিজের ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। সেই সঙ্গেই আবার রানাঘাট পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাতেও নাম রয়েছে সাধন ও তাঁর পরিবারের। বিগত ১০ বছর ধরে রানাঘাট পৌরসভার ভোটার তালিকায় এই তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম রয়েছে বলে খবর। একথা সামনে আসতেই সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা।
একই ব্যক্তির নাম দু’টি আলাদা পৌরসভার ভোটার তালিকায় কীভাবে থাকতে পারে? তাও আবার কাউন্সিলরের মতো একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রানাঘাট বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তৃণমূলের (Trinamool Congress) এই রকম অনেক ভূতুড়ে ভোটার রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ‘জানতে চেয়েছিল আমি হিন্দু কিনা’! অক্সফোর্ড বিতর্ক নিয়ে বিস্ফোরক মমতা
রানাঘাটের বিধায়কের কথায়, ‘১০ নং ওয়ার্ডের ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তৃণমূলের এই রকম অনেক ভূতুড়ে ভোটার রয়েছে। রানাঘাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নাম রয়েছে হিজুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের। তৃণমূল ভূতুড়ে ভোটার ধরতে যাওয়ায় একদিকে ভালোই হয়েছে’।
চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি দাবি করেন, ‘এই তৃণমূল কাউন্সিলর বিগত ১০ বছর ধরে দু’জায়গায় ভোট দিয়ে চলেছেন। এভাবেই ভয়ঙ্কর কারচুপি করে ভোটে জিতছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েছি ও ১৬,০০০ ভোটার লিস্টের নাম জমা দিয়েছি। এর বাইরেও এমন অনেক নাম রয়েছে। সেগুলি বাতিল করে নতুন করে ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে’।
একইসঙ্গে ওই তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলরের পদ বাতিল করে আবার ভোটের মাধ্যমে ওই ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম। একই কাউন্সিলরের দুই জায়গার ভোটার তালিকায় নাম থাকার বিষয়টি নিয়ে পাল্টা মুখ খুলেছে তৃণমূলও।
জোড়াফুল শিবির পরিচালিত রানাঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান কুশল দেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দুই জায়গার ভোটার তালিকায় নাম থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা এটাও দেখেছি, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নামও দুই জায়গায় আছে। এটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের গাফিলতি। আমরা চাই স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হোক’।
আরও পড়ুনঃ যে চাঁদ দেখে ইদ হয়, সেই চাঁদ দেখেই হয় করওয়াচৌথ, বাংলা যতটা হিন্দুদের, ততটাই মুসলমানের: অভিষেক
অন্যদিকে চাকদহ পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবব্রত নাগও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কাউন্সিলর সত্যজিৎ বিশ্বাসের ভোটার লিস্টে নাম থাকবে নাকি থাকবে না সেটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। আর কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচন কমিশন নিয়ন্ত্রণ করে। সেই কারণে এটা পুরোপুরি কেন্দ্রের গাফিলতি’।
উল্লেখ্য, আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের আগে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ধরতে তৎপর তৃণমূল (Trinamool Congress)। এই আবহে খোদ তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ। দুই জায়গার ভোটার তালিকায় নাম থাকার অভিযোগ উঠেছে সত্যজিৎ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও লাভ হয়নি বলে খবর।