বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনে সফল হতে গেলে গভীর নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমের আর অন্য কোনো বিকল্প হয়না। এভাবেই, জীবনের যে কোনো সময়েই হাসিল করে ফেলা যায় সফলতার স্বাদ। এমনিতেই, বর্তমান সমাজে এখন নারী এবং পুরুষ উভয়েই এগিয়ে চলেছেন নিজেদের মত করে। পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রেই এখন মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। বর্তমান প্রতিবেদনেও আমরা একজন মহিলার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি ৬২ বছর বয়সেও পশুপালন করে দুধ উৎপাদনের মাধ্যমে রোজগার করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। শুধু তাই নয়, তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন আরও বহুজন।
মূলত, আজ আমরা গুজরাটের বানাসকান্থা জেলার ভাদগাম তহসিলের নাগানা গ্রামের বাসিন্দা নাভালবেন দালসাংভাই চৌধুরীর (Navalben Dalsangbhai Chowdhary) কথা আপনাদের জানাবো। আপাতত তাঁর বয়স হল ৬২ বছর। তিনি নিজে একজন নিরক্ষর মহিলা হলেও আজ তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন। জানা গিয়েছে, তিনি বহু বছর ধরে পশুপালনের সাথে জড়িত। তাঁর চার ছেলে চাকরি করেন। পাশাপাশি, তাঁরাও নাভালবেনকে পশুপালনে সাহায্য করেন। এভাবেই তাঁদের ফার্ম খুব ভালো ভাবে চলছে।
এভাবে শুরু হয় কাজ:
মূলত, নাভালবেন বিগত বহু বছর ধরে দুধ বিক্রি করে প্রচুর টাকা আয় করছেন। নাগানা গ্রামে যখন তাঁর বিয়ে হয় তখন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ছিল মাত্র ৮ থেকে ১০ টি গরু। ধীরে ধীরে তিনি কঠোর পরিশ্রম ও সংগ্রাম করে তাঁর নিজের ফার্ম তৈরি করার ফলে বর্তমান সময়ে সেই সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে প্রায় ২৫০-তে। তাঁর ফার্মে গরু এবং মহিষ প্রতিপালিত হয়।
এদিকে স্বাভাবিকভাবেই একজন মহিলা হয়ে ২৫০ টি গবাদি পশুর দেখাশোনা করা মোটেও সহজ কাজ নয়। কিন্তু, তাও তিনি মনের আনন্দে এই কাজ করেন। পাশাপাশি, নাভালবেন করে দিয়েছেন কর্মসংস্থানের সুযোগও। আপাতত তাঁর খামারে ১৫ জন কর্মচারী কাজ করেন।
দেশের একটি নামী ডেয়ারি কোম্পানিতে বিক্রি করছেন দুধ:
নাভালবেন প্রতিদিন তাঁর খামার থেকে প্রায় ১,০০০ লিটার দুধ পান। পাশাপাশি, দেশের অন্যতম একটি বিখ্যাত ডেয়ারি কোম্পানিকে সেই দুধ বিক্রি করে দেন তিনি।
বার্ষিক আয় এক কোটিরও বেশি:
স্বাভাবিকভাবেই, প্রতিদিন হাজার লিটার দুধ বিক্রির মাধ্যমে তিনি উপার্জনও করেন ভালো। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বছরে ২ লক্ষ ২১ হাজার কেজি দুধ উৎপাদিত হয় নাভালবেনের ফার্মে। আর এভাবেই তিনি মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা এবং বছরে ১ কোটি টাকারও বেশি আয় করছেন।
মহিলাদের জন্য অনুপ্রেরণা:
নাভালবেন তাঁর কঠোর পরিশ্রমের ফলে আজ সাফল্য অর্জন করেছেন এবং সকলের কাছেই এক অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছেন। পাশাপাশি, তাঁকে দেখে অন্যান্য মহিলারাও সাহসের সাথে এগিয়ে আসছেন এবং পশুপালনের দিকে মনোযোগ দিতে শুরু করেছেন। এছাড়াও, তাঁর এই বিরাট সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারও একাধিকবার তাঁকে সম্মানিত করেছে।