বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময় যত এগোচ্ছে ততই যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে মানুষের চিন্তাভাবনা। এমনকি, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিত্যনতুন ভাবনাকে নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে মানুষ। এমতাবস্থায়, তার প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও। যার ফলে বর্তমান সময়ে যুবসমাজ গতানুগতিক ভাবে চাকরির পথে না হেঁটে নিজস্ব উদ্যোগের মাধ্যমে দারুণভাবে সফলতা (Success) অর্জন করছেন। সেই রেশ বজায় রেখেই এই প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একজন যুবকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি BTech-এর পরে চাকরি না পেয়ে মন থেকে ভেঙে না পড়ে মৌমাছি পালনের (Bee Farming) মাধ্যমে রীতিমতো এক নজির স্থাপন করেছেন।
এমনকি, বর্তমানে ওই যুবক বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। মূলত, আমরা বিহারের (Bihar) সাহারসার সাহুরিয়া পূর্ব পঞ্চায়েতের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনীশ কুমারের প্রসঙ্গটি জানাবো। জানা গিয়েছে, BTech করার পর মনীশ কুমার চাকরি খুঁজতে হরিয়াণায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ভালো চাকরি না পেয়ে তিনি ফিরে আসেন। এরপর ভাগলপুরের কাহালগাঁও যাওয়ার পথে তিনি হঠাৎই মৌমাছি প্রতিপালনের কিছু বাক্স দেখতে পান। তারপরেই সেইখানে থাকা মৌমাছিগুলিকে অনুসরণ করে তিনি একটি বাগানে পৌঁছে যান। আর এভাবেই তিনি পেয়ে যান তাঁর লক্ষ্য।
এরপরই মনীশ ২০১১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় উদ্যানপালন মিশন প্রকল্পের অধীনে ৪০ টি মৌমাছির বাক্স নিয়ে তাঁর স্টার্টআপ শুরু করেছিলেন। আজ তাঁর কাছে ১,৫০০ টি বাক্স রয়েছে। শুরুতে তিনি বার্ষিক ৬০-৭০ হাজার টাকার মধু পেতেন। যা এখন বেড়ে বার্ষিক ২০-২১ লক্ষ টাকা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এক বছরে একটি বাক্স থেকে ৪০ থেকে ৪৫ কেজি মধু তৈরি হয়।
সারা বছর চলে এই প্রক্রিয়া: মনীশের মতে, তিনি সারা বছর মধু তৈরি করেন। যার জন্য তাঁর প্ল্যানিংও রয়েছে। জানা গিয়েছে, বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শস্য থেকে মধু তৈরি করা হয়। মনীশ জানান, তিনি মে মাসে রাঁচি এলাকায় করঞ্জ গাছের মাঝখানে মৌমাছির বাক্সগুলিকে রাখেন। এরপর জুন মাসে তাঁরা সিমরি বখতিয়ারপুরের জাম বাগানে মৌমাছি পালন করেন। এদিকে, জুলাই-আগস্ট মাসে ভাগলপুর বা খাগরিয়া জেলায় অবস্থান করে তাঁরা ভুট্টা ও ধঞ্চে গাছের মাধ্যমে মৌমাছিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
এরপর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঝাড়খণ্ডের ডালটনগঞ্জ জেলার নওয়া বাজার এলাকায় বন তুলসী গাছের মাঝে মৌমাছি রেখে মধু তৈরি করা হয়। মনীশ জানিয়েছেন, তাঁর বাবা রাম প্রসাদ যাদব ও ভাই সুশীল কুমার এবং আশিস কুমার সহ আরও ১৪ জন মধু উৎপাদনের কাজে যুক্ত হয়েছেন। সকলকে মাসিক ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়। পাশাপাশি, কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। তিনি জানান, সেখান থেকে উৎপাদিত প্রতি কেজি মধু বিক্রি হয় ২৫০ টাকায়। আর এভাবেই মোটা টাকা লাভ করছেন তিনি।