টাকা ফেরত না দিলে পিঠের চামড়া উঠিয়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি! কোচবিহার শহর জুড়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পোস্টার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুমাস ধরে বঙ্গে দাঁড়িয়ে বহুল চর্চিত বিষয় ‘নিয়োগ দুর্নীতি’ ইস্যু (Recruitment Issue)। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে ঢেকে গেছে বাংলার মাটি। প্রকাশ্যে এসেছে হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের নাম, গ্রেফতার হয়েছেন শাসক দলীয় নেতা থেকে শুরু করে পর্ষদের সদস্য। এরই মাঝে ফের একবার প্রকাশ্যে শাসক দলের নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ।

চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছেন কোচবিহার (Coochbehar) পুরসভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindra Nath Ghosh)। এমনই দাবিতে কোচবিহার শহর জুড়ে তৃণমূল নেতার (TMC Leader) বিরুদ্ধে লাগানো হয়েছে পোস্টার। শুধু রবীন্দ্রনাথ ঘোষই নয়, পাশাপাশি কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণী পোদ্দারের নামেও একই দাবি করে পড়েছে পোস্টার।

ঠিক কী লেখা রয়েছে পোস্টার জুড়ে? শহর জুড়ে ছড়ানো পোস্টার গুলিতে লেখা রয়েছে “আমাদের দলের বর্তমান পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও কল্যাণী পোদ্দার কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছেন, যাহা কোচবিহারবাসীর কাছে অবগত রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা সমগ্র কোচবিহার থেকে তুলেছে, চাকরি দিতে পারেনি, টাকাও গায়েব করে দিয়েছে, যে টাকার কিছু অংশ কলকাতায় দেওয়া হয়েছে। কল্যাণী পোদ্দার বদলি ও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন। আমাদের সময় এসেছে, ওদের বাড়ি ঘেরাও করে টাকা আদায় করার, টাকা ফেরত না দিলে তাঁদের পিঠের চামড়া উঠিয়ে নেওয়া হবে।’ পাশাপাশি সেগুলি ‘কোচবিহার জনগণের’ পক্ষে লাগানো হয়েছে বলেও দাবি করা হয় পোস্টারগুলিতে।

সোমবার সকাল থেকে  শহর জুড়ে এই পোস্টার গুলি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, ‘‘এটা কারা করেছে, তা জানা নেই। যদি সাহস থাকে, তা হলে সামনে এসে এ সব কথা বলুক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাবার নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে, সেটা প্রকাশ্যে এসেছে। বিজেপি সে ঘটনার কাউন্টার করতে পারছে না, তাই আমাদের সম্মানহানি করার জন্য এ ধরনের নোংরা খেলায় নেমেছে।’’

rabindra

অন্যদিকে থেমে থাকেনি স্থানীয় বিজেপি শিবিরও। কোচবিহার জেলা বিজেপি সভাপতি সুকুমার রায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং কল্যাণী পোদ্দার চাকরির নামে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, তা সকলেই জানে। কিন্তু এত দিন মানুষ কিছু বলার সাহস পায়নি। বিজেপি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে, তাই মানুষ এখন বলার সাহস পাচ্ছে। চাকরির নামে টাকা নিয়েছেন, এ ধরনের বহু তৃণমূল নেতা ইতিমধ্যে জেলে রয়েছেন। যাঁরা ওই নেতাদের টাকা তুলে দিয়েছেন, তাঁরা এখনও বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সাধারণ মানুষের টাকা যদি এই নেতারা ফেরত না দেন, তা হলে ভবিষ্যতে এঁরা আর বাইরে বেরোতে পারবেন না। এঁদের রাস্তাঘাটে যেখানেই পাবেন ঘেরাও করে টাকা আদায় করবে সাধারণ মানুষ।’’ প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, পঞ্চায়েত ভোট পূর্বে কিছুদিন থেকেই একের পর এক সামনে আসছে শাসক দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এরূপ দুর্নীতির পোস্টার-প্রাচীরপত্র।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর