বাংলা হান্ট ডেস্ক: ঠিক যেন বইয়ের পাতায় পড়া কোনও গল্প, যেখানে মাটির তলা থেকে হঠাৎই পাওয়া যায় কলসি ভরা মোহর। সত্যিই সত্যি হল সেই গল্প। মৃতা ভিখারিনীর ঘর থেকে উদ্ধার হল ‘গুপ্তধন’। বিশ্বাস হল না বুঝি? প্রথমে ঠিক এভাবেই বিশ্বাস করতে পারেননি ইসলামপুরের বাসিন্দারাও। কিন্তু শেষ মেষ তিনটি ট্রাঙ্ক ভরতি নোটের পাহাড় দেখে বিশ্বাস করতে বাধ্য হন তাঁরাও। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর এলাকায়।
ইসলামপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোকনাথ কলোনির বাসিন্দা বৃদ্ধা কণিকা মোহান্তের দিন গুজরান হত ভিক্ষা করেই। সারা দিনে চেয়ে চিন্তে যা মিলত সেই দিয়েই কোনও ক্রমে পেট চালাতেন তিনি। অন্তত আজকের আগে অবধি সবারই ধারণা ছিল এমনটাই। কিন্তু এরই মধ্যে দিন পাঁচেক আগে হঠাৎই মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। এরপর এদিন তাঁর ঝুপড়ি ঘর থেকে উদ্ধার হল তিনটি ট্রাঙ্ক। প্রতিটিতেও ঠাসা রয়েছে নোট এবং খুচরো পয়সা। মঙ্গলবার সেই টাকার পাহাড় গুনতে বসে কার্যতই চক্ষু চড়কগাছ হবার জোগাড় প্রতিবেশীদের। গুনতে গুনতে রীতিমতো হাতে ব্যথাই হয়ে যায় তাঁদের। অনুমান করা হচ্ছে ওই বৃদ্ধার গচ্ছিত মোট টাকার পরিমাণ কয়েক লক্ষেরও বেশি।
এই বাড়িতে কণিকার সঙ্গে থাকতেন বোন মণিকা দাস এবং বৃদ্ধা মা। দাদা বাবলু দাস থাকতেন শহরেরই অন্য জায়গায়। এই টাকার খবর পেয়ে এই বাড়িতে এসে হাজির হন বাবলুও। তিনি বলেন, ‘আমার বোন ভিক্ষা করত। বাইরেই খেত। আমি নিজেও গরীব, অসুস্থ। এই টাকা আমি নিজে নেব না। ব্যাঙ্কে রাখব কিছুটা। বাকি টাকা দিয়ে বাড়ি মেরামত এবং অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা করাব। বোনের শ্রাদ্ধশান্তিও করতে হবে।’
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় কার্যতই হতভম্ব ইসলামপুরবাসী। এখনও তাঁরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না রাস্তায় রাস্তায় সামান্য ভিক্ষা করে এভাবে লক্ষাধিক টাকা সঞ্চয় করেছিলেন কণিকা। নিজের পিছনে একটা টাকাও খরচ না করে সবটুকু সম্পত্তি যকের ধনের মতই বুকে আগলে রেখেছিলেন বৃদ্ধা। ঘটনায় কার্যতই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।