ঝাড়গ্রামে পরবের আনন্দে, ফিকে বাঘের ভয়! ভিড় বাড়ছে মকরমেলায়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গোটা ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জুড়ে এখন মকর উৎসবের মেজাজ। সারা বছর এই পরবের অপেক্ষাতেই থাকেন এখানকার মানুষজন। সেই উপলক্ষেও শুরু হয়ে গিয়েছে হাট। এরই মধ্যে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল এলাকায় এই সবাইকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে বাঘের ভয়। এই পরিস্থিতিতে গোটা এলাকার ওপর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে প্রশাসনের। নজর রাখছেন বনদপ্তরের কর্মীরাও।

বাঘের আতঙ্কের মধ্যেই ভিড় বাড়ছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) মকরমেলায়

জানা যাচ্ছে,ইতিমধ্যেই বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি বনাঞ্চলের মনিয়াডির সহ আশেপাশের জঙ্গলে। রবিবার সকালে বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে মনিয়াডির জঙ্গলের রাস্তায়। তারপরেই আবার বিকেলের দিকেও বাগডোবার জঙ্গলের রাস্তায় বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। তারপর থেকেই গোটা এলাকায় মাইকিং শুরু করেছেন বনকর্মীরা। জানা যাচ্ছে, জুজারধরার জঙ্গলপথে রাতের দিকে বাঘের বিষ্টাও পাওয়া গিয়েছে।

সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে বাঘটি এলাকা ধরে হেঁটে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাগডোবা, মনিয়াডি, জুজারধরা এলাকায় ৫০টি নাইট ভিশন ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে (Jhargram) একশোর বেশি বনকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে  ওই এলাকায় সুন্দরবনের বনদপ্তরের একটি দলও যাচ্ছে। বাঘ ধরার জন্য যে খাঁচা পাতা হবে সেই খাঁচাও নিয়ে আসা হচ্ছে বলেই খবর। ওই এলাকায় নিরাপত্তার জন্য প্রচুর পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাড়ছে এই সরকারি প্রকল্পের টাকা! নতুন বছরেই বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

জঙ্গলমহলের মানুষদের জন্য মকর এবং টুসু পরব অত্যন্ত বড় উৎসব। এই পরবের সাথেই মিশে রয়েছে এখানকার আমজনতার আবেগ। সেই সাথে বহু মানুষের রুজি রোজগারের বিষয়টিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক মানুষের সারা বছরের বাড়তি আয় হয় এই মেলা থেকেই। তাই বাঘের আতঙ্কের মধ্যেই মেলায় ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাই এ প্রসঙ্গে তাঁরা বলছেন লোকের মুখে বাঘ আসার খবর তারা পেয়েছেন, তাই ভয় থাকলেও ঘাগরা  মেলা তাদের এলাকার সবচেয়ে বড়মেলা। সারা বছর তারা ওই মেলার অপেক্ষাতেই থাকেন। এই কারণেই মেলায় গেলেও বাঘের ভয়েই আগে থেকেই বাড়ি ফিরে আসবেন তাঁরা।

Jhargram
অন্যদিকে বামুনডিহা গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন টুসু তাদের বড় প্রিয় উৎসব। তবে প্রশাসন এবং বনদপ্তরের উপর তাদের ভরসা রয়েছে। তাই বাঘ নিয়ে ভয় থাকলেও উৎসবে সামিল তাঁরা হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ সিং সর্দার জানিয়েছেন, ‘বনদপ্তরের গাইডলাইন মেনে সন্ধ্যার আগেই সবাইকে বাড়ি ফিরে আসতে বলা হয়েছে। সবাইকে দলবদ্ধ ভাবে মেলায় যাওয়ার পাশাপাশি জঙ্গলের রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ একইসাথে বলা হচ্ছে, ‘আতঙ্কিত হবেন না। প্রশাসন, বনদপ্তর,পুলিশ সবাই সজাগ আছে।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর