বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) টানা দু’বছর জেল খাটার পর সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। তারপর থেকেই চর্চার শিরোনামে কেষ্ট। ‘বাঘ’ নিজের এলাকায় ফিরেছে, কবে আবার ‘চড়াম-চড়াম’ শোনা যাবে? আগের মতো সক্রিয় রাজনীতিতে কবে ফিরবেন কেষ্ট? এই নিয়েই জল্পনা চলছিল। তবে এরই মাঝে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন অনুব্রত।
‘বাঘের’ গলায় উল্টো সুর?
সোমবার সিউড়ির ২ ব্লকের পুরন্দরপুরের মাঠে বান্ধব সমিতির সভায় উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত। সেখান থেকেই তিনি জানালেন, ২০২৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে আনার পরই তিনি বীরভূমের জেলা সভাপতির দায়িত্ব ছাড়বেন। তার আগে গুরুদায়িত্ব পালন করবেন তিনিই। অর্থাৎ আপাতত কেষ্টর রাজনীতি থেকে দূরে যাওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই।
এদিন সিউড়ির পুরন্দরপুর এলাকার বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠানে ওই এলাকার ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম নিজের পদ ছাড়ার আবেদন জানান। সেই সময়ই বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘নুরুল ভীষণ ভালো ছেলে। আমরা একসাথে রাজনীতি করেছি এবং একসাথে কাজ করেছি। আমি নুরুলকে বলব এখনই পদ না ছাড়তে। আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়ার পর ছাড়তে হলে, একসাথে দুই দাদা ভাই মিলে পদ ছাড়বো তখন।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। প্রথমে আসানসোল সিবিআই আদালতে এই মামলা চলে। সেখানেই সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন তৃণমূল নেতা। এরপর তিহাড় জেলে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় অনুব্রতকে। সেখানে তাকে গ্রেফতার করে ইডিও। এতদিন তিহাড়ে থাকার পর দুর্গাপুজোর ঠিক আগে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। দীর্ঘ এই সময়ে রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে থেকেছেন অনুব্রত।
বর্তমানে ধীরে ধীরে রাজনীতির মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা করলেও আগেই মতো দাপট কেষ্টর গলায় নেই। আর নাই সেই দাপট আছে জেলাতে। আগে যেই অনুব্রতর নাম বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত এখন রাজনৈতিকভাবে অনুব্রত মণ্ডলের সেই প্রাধান্য আর জেলায় নেই বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ঝাঁঝালোও বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না অনুব্রতর মুখে। আগের ‘চড়াম চড়াম’ এর বদলে এখন কেষ্টর মানবিক রূপটাই বেশি দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: থ্রেট কালচারের অভিযোগে সাসপেন্ড আর জি করের ৪৭, এবার পার্টি করা হল অধ্যক্ষকে, হাইকোর্টে বড় আপডেট
অনুব্রত মণ্ডলের পাশে একসময় বহু তৃণমূল নেতা-কর্মীকে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। এখন আর দেখা যাচ্ছে না বলেই চর্চা। তাহলে কি রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এবার পদ ছাড়ার কথা বললেন অনুব্রত? উঠছে প্রশ্ন।