বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘ দু’বছর জেলে কাটিয়ে পুজোর ঠিক আহেই বাংলায় ফিরে এসেছে বীরভূম (Birbhum) জেলা তৃণমূল (Trinamool Congress) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। ধীরে ধীরে রাজনীতির ছন্দে ফিরছেন কেষ্ট। তবে অনুব্রতর জেলমুক্তির পর থেকেই বীরভূমে ফের দিকে দিকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি। বারে বারে বিরোধী গোষ্ঠীর হাতে আক্রান্ত হতে হচ্ছে অনুব্রত অনুগামীদের। ঠিক যেমন হল বীরভূমের দুবরাজপুরে। কেষ্টর ছবি লাগাতে গিয়ে মার খেলেন তৃণমূলের শিক্ষক নেতা। পুলিশের সামনেই ঘটল চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা।
ঠিক কি ঘটেছিল?
দুবরাজপুরের লোবার এলাকায় রাস্তার ওপর একটি অস্থায়ী গেটে দাদা অনুব্রত মণ্ডলের ছবি লাগাচ্ছিলেন জেলা শিক্ষা সেলের সভাপতি অভিজিৎ মণ্ডল। সেই ছবি লাগানো নিয়েই শুরু হয় ঝামেলা। অভিযোগ সেই ছবি লাগাতে বাধা দেয় স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি পিনাকী চক্রবর্তী। তিনি প্রায় ১০০ লোক নিয়ে সেখানে হাজির হন। শুরু হয় হম্বিতম্বি। যাতে কেষ্টর ছবি না লাগানো হয় সেই নিয়ে হুমকিও দেন।
তবে অভিজিৎ মণ্ডল তাদের কথা না শুনলে পিনাকী চক্রবর্তীর সামনেই তাকে মারধর করে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এমনই মারা হয় জে বর্তমানে
আহত হয়ে গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শিক্ষা সেলের সভাপতি। অভিযোগ, সেই সময় ঘটনাস্থলে স্থানীয় পুলিশ কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে কেউই তাকে বাঁচায় নি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। প্রথমে আসানসোল সিবিআই আদালতে এই মামলা চলে। সেখানেই সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন তৃণমূল নেতা। এরপর তিহাড় জেলে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় অনুব্রতকে। সেখানে তাকে গ্রেফতার করে ইডিও। এতদিন তিহাড়ে থাকার পর দুর্গাপুজোর ঠিক আগে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। দীর্ঘ এই সময়ে রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে থেকেছেন অনুব্রত।
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়! তড়িঘড়ি ছুটি ঘোষণা, কতদিন বন্ধ থাকবে স্কুল-কলেজ? চূড়ান্ত সতর্কতা ৯ জেলায়
বর্তমানে ধীরে ধীরে রাজনীতির মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা করলেও আগেই মতো দাপট কেষ্টর গলায় নেই। আর নাই সেই দাপট আছে জেলাতে। জেলা সংগঠনের রাশও অনেকটাই অনুব্রতর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। আগে যেই অনুব্রতর নাম বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত এখন রাজনৈতিকভাবে অনুব্রত মণ্ডলের সেই প্রাধান্য আর জেলায় নেই বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তাছাড়া আর্থিকভাবেও দুর্বল কেষ্ট। একথা নিজ মুখেই শিকার করেছেন তিনি। অনুব্রতর বিপুল সম্পত্তি ও ব্যাঙ্কে জমা থাকা টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। অনুব্রত মণ্ডলের পাশে একসময় বহু তৃণমূল নেতা-কর্মীকে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত। এখন আর দেখা যাচ্ছে না বলেই চর্চা। এই অবস্থায় অনুব্রতর পাশে ম্যান পাওয়ার কতটা থাকবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।