মদনবাণে বিদ্ধ তৃণমূল নেতারাই! নদিয়ায় বললেন ‘পকেটটা বড্ড ভারী করে ফেলেছেন”

বাংলা হান্ট ডেস্ক: তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হলেন খোদ মদন মিত্র! আর এবার কালারফুল বয়ের ব্যঙ্গক্তির মুখে পড়লেন নদিয়া জেলায় দীর্ঘদিন তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা নেতারা। বুধবার আইএনটিটিইউসি-র উদ্যোগে হরিণঘাটা শহরে আয়োজিত এক রক্তদান শিবিরে হাজির হয়েছিলেন কামারহাটির বিধায়ক। সেখানেই মদন মিত্র বলেন, “যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে নদিয়া জেলায় দায়িত্বে ছিলেন, আমি জানি না তাঁরা কার কী করেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজদের পকেটটা বড্ড ভারী করে ফেলেছেন।”

মদন অবশ্য প্রকাশ্যে মুখে আনেননি শাসক দলের কোন নেতার নাম। যদিও বিরোধীরা দাবি করছেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের এমন বক্তব্যে দলের একাংশের দুর্নীতিই আবারও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। রানাঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকারের মতে, “উনি সত্যি কথাই বলেছেন। বাস্তবটা উনি জানেন তো। আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় তিনি এ-ও জানেন যে কাটমানির পয়সা কোথায় কোথায় গিয়েছে, কে কত খেয়েছে।”

তবে তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী রত্না ঘোষ এই বিষয়ে একেবারেই মুখ খুলতে চাননি। তবে, ঘাসফুল শিবিরের নেতা মদন মিত্রের কথার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি শুধু বলেন, “উনি ওঁর কথা বলেছেন। এ নিয়ে আমি কী বলব!” একইসঙ্গে এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি জেলা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা শংকর সিংহ। এমনকি, শংকর-পুত্র তথা রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শুভঙ্কর সিংহও কোন মতামত ব্যক্ত করতে চাননি ।

তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের পরেও অবশ্য চুপ থাকেননি। কারও নাম না-করেও তাঁর কটাক্ষ, “সিংহ গ্রামে থাকলেই সিংহ হওয়া যায় না। কর্মীদের হতে দিন। কৃষকের ঘরে ভোটটা থাকে, টেন্ডারের কাগজের মধ্যে ভোট থাকে না।” অবশ্য কার উদ্দেশ্যে এমন কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন এমএম, সেই ব্যাখ্যায় যাননি ঘাসফুল শিবিরের পোড়খাওয়া এই রাজনীতিবিদ। তবে দলের তৃণমূলস্তরের কর্মীরা নিজেদের মতো করে তার কথার ব্যাখা করছেন, ফলত জল্পনা আরও বাড়ছে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অলকেশ দাসের মতে, “তৃণমূল যে সর্বব্যপ্ত একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দলে পরিণত হয়েছে তা মদন মিত্রের কথাতেই পরিষ্কার।”

Madan Mitra 4

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে শাসক দল বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেও দক্ষিণ নদিয়ার আটটি আসন দখল করেছিল গেরুয়া শিবির। সেই প্রসঙ্গ টেনে মদন বলেন, “নদিয়ায় হারিয়ে যাওয়া আমাদের যে আটটা আসন, তার জন্য আমরা অত্যন্ত অনুশোচনায় ভুগছি। পঞ্চায়েতে এই আসন আমাদের ফেরত দিন। তৃণমূলের উপর রাগ করে, স্থানীয় কারও উপর ব্যক্তিগত রাগ করে তৃণমূলকে দূরে ঠেলে দেবেন না।”


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর