বাংলা হান্ট ডেস্ক : কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে নতুন বিতর্ক তৈরি করলেন তৃণমূলের অভিনেত্রী-কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় (Ananya Banerjee)। বাজেট অধিবেশনে বিরোধিদের নিশানা করতে গিয়ে ফাদার ও নানের যৌন সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে শোরগোল।
এইদিন বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি সকলকে একটি গল্প শোনাবেন। সূচনাতেই তিনি বলেন, এটি নিছকই একটি গল্প। তবে তার গল্প শোনার পর অনেকেই মনে করছেন, এতে করে কিছু মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছেন তিনি। এরপরেই অনন্যার বক্তৃতার ওই অংশটি পুরসভার রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেছেন পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়।
এইদিন বাজেট অধিবেশনে গল্পের ছলে অনন্যা বলেন, ‘বিদেশে ওপেন সেক্স প্রচলিত’। এরপরেই ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বলতে শুরু করেন, ‘একদিন এক ফাদার গাড়ি করে চার্চে যাচ্ছিলেন। অল্পবয়সি সুন্দরী নান তার কাছে লিফট চান। গাড়িতে ফাদার নানের শরীর স্পর্শ করছিলেন। তখন নান বলেন, ‘আপনি আর্টিকল ১১২ পড়েননি?’ তা শুনে হকচকিয়ে যান ফাদার। চার্চে এসে বাইবেলের আর্টিকল ১১২ পড়ে দেখেন। সেখানে লেখা, ‘গভীরে যাও। আরও গভীরে যাও। তবেই অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে পারবে।’
আরও পড়ুন : বসতেন খোদ অনুব্রত, মমতা বীরভূম ছাড়তেই তৃণমূল অফিসে ED হানা
এখানেই শেষ নয়, এর সাথেই তৃণমূল কাউন্সিলরের সংযোজন, ‘মরাল অফ দ্য স্টোরি, বাইবেলটা ঠিকমতো পড়া থাকলে তিনি নানকে ক্লু দিতে পারতেন। অর্থাৎ বাইবেল হোক বা মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, যে কোনও কিছু ঠিকমতো পড়া না থাকলে অসুবিধা।’ অনন্যার এই ‘যৌনগন্ধী’ গল্পে বাইবেল, ফাদার, নানের উল্লেখ দেখে প্রাথমিকভাবে হকচকিয়ে যায় সকলেই।
এরপরই প্রতিবাদ করে ওঠে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। পুরসভার চেয়ারপার্সন অনন্যার এই বক্তব্যটুকু বাদ দেওয়ার কথা বললেও তাতে ক্ষান্ত হননি বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই অনন্যার সদস্যপদ খারিজের দাবি তুলেছেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। অনন্যার মন্তব্যের বিরোধীতা করেছেন, তৃণমূল কাউন্সিলর সুস্মিতা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘ফাদার-নানের সম্পর্কে ‘সেক্স’ শব্দটি উচ্চারণ করে অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করেছেন অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
আরও পড়ুন : শাহজাহানের পর খলিল! লাঠি, ঝাঁটা হাতে মাঠে হাওড়ার মহিলারা! তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
এদিকে অনন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একটা রূপকধর্মী গল্প বলে শুরু করেছিলাম। যে শব্দ নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে, সেই ‘সেক্স’ তো এখন পাঠ্যক্রমের অঙ্গ। হিন্দিবলয়ের প্রেরণা নিয়ে যারা রাজনীতি করেন, তাদের কাছে এটা সমস্যা বলে মনে হয়েছে। কারণ, এক জন মহিলা এমন খোলামেলা আলোচনা করছেন। নারীবিদ্বেষী মনোভাব থেকেই এই বিরোধিতা।’