দিনে আয় ২০০ টাকা! পেটের দায়ে টোটো চালাচ্ছেন বালুরঘাটের তৃণমূল কাউন্সিলর

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন ভুরিভুরি অভিযোগে ভরেছে শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের নাম, কোথাও দুর্নীতি, তো কোথাও লুঠের অভিযোগ, ঠিক সেই আবহেই এক বিপরীতমুখী ঘটনার নিদর্শন মিলল দক্ষিণ দিনাজপুরে (South 24 Parganas)। শাসক দলের কাউন্সিলর (Tmc Councilor) চালাচ্ছেন টোটো। না, কোনো পাবলিসিটির জন্য নয়, নিছক মজার ছলেও নয়, বরং পেটের টানে বেছে নিয়েছেন এই পথ।

নজিরবিহীন এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট পুরসভার (Balurghat Municipality) ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। জানা গিয়েছে, সংসার চালানোর দায়ে বিগত একমাস ধরে টোটো চালাচ্ছেন শ্যামল কুমার সাহা নামক ওই কাউন্সিলর। পূর্বে তিঁনি ওই পুরসভার হয়েই ইলেকট্রিকের কাজ করতেন। পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শ্যামলবাবু।

সেই কাজ করেই কোনোক্রমে দিন অতিবাহিত করছিলেন তিঁনি। তবে এরই মধ্যে তাঁর জীবনে আসে এক ভিন্ন অধ্যায়। ২০২২ সালে দল তাঁকে তৃণমূলের কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার জন্য অনুরোধ করে। দলের কথা মত সেই ওয়ার্ডে প্রার্থী হন শ্যামলবাবু। শুধু তাই নয় বিরোধীদের হারিয়ে সেই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিঁনি। তবে এর পরই ঘটে বিপত্তি। কাউন্সিলর পদে আসীন হওয়ার পরই পুরসভার দিন মজুরির কাজটি চলে যায় তাঁর। সামান্য পরিমান কাউন্সিলরের যে সান্মানিক ভাতা তিঁনি পান, তাতে সংসার চালানো দুস্কর হয়ে উঠছিল তাঁর জন্যে।

অবশেষে কোনো পথ না পেয়ে গতমাস থেকে টোটো চালাতে শুরু করেন তিঁনি। টোটো চালিয়ে সারাদিনে ২০০ – ২৫০ টাকা উপার্জন করেন তিঁনি৷ তারপর নিজের দায়িত্ব পালন করতে দলের কাজ সেরে সন্ধেয় ফের টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। জানা গিয়েছে, বাড়িতে নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিঁনি, তবে বর্তমানে মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী-স্ত্রীর দুজনার পেট এখন টোটো চালিয়েই ভরাচ্ছেন তিঁনি।

tmc flag

এ বিষয়ে শ্যামলবাবু জানান, তাঁর কষ্ট এখন বেশ কিছুটা কমেছে। সৎ পথে সম্মানের সঙ্গেই উপার্জন করছেন তিঁনি। পাশাপাশি জনসেবার কাজও মন দিয়েই করছেন তিঁনি। শাসকদলের কাউন্সিলর হয়ে টোটো চালাতে বিন্দুমাত্র লজ্জা নেই তাঁর। বরং নিজের পেশা নিয়ে গর্বিত তিঁনি। অন্যদিকে, এই বিষয়ে জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, শ্যামলবাবুর মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তিই হল নতুন তৃণমূল।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর