ক্ষমতা আসলেও পাল্টাননি জীবন, সবজি বেচেই সংসার চালান তৃণমূল কাউন্সিলর

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সবজি নিয়ে বাজারে বসে পড়া। তারপর থেকে চলতে থাকে একনাগাড়ে চিৎকার এবং সবজি বিক্রি। আর পাঁচজন সবজি বিক্রেতার মতই নিজের কাজে মগ্ন থাকেন তিনি। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, শিপুল সাহা (Shipul Saha) নামে সেই ব্যক্তি দুর্গাপুরের (Durgapur) তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর (Trinamool Congress Councilor)! বর্তমানে তাঁর কাজের প্রতি এই নিষ্ঠা সকলের মুখে মুখে। শুধুমাত্র সবজি বিক্রি নয়, পরবর্তীতে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের সমস্যার কথা শোনা এবং যাবতীয় কাজকর্ম করাও তাঁর তালিকায় থাকে। বর্তমানে যখন শাসক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ উঠে চলেছে, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই তৃণমূল নেতার জীবন কাহিনী যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে।

ভোর হলেই সবজি বিক্রি করতে রওনা দেন শিপুল। উত্তর 24 পরগনার হাবরার এই বাসিন্দা সকাল হলেই অন্যান্য সকল সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে বসে পড়েন বাজারে এবং এরপর থেকে চলতে থাকে ক্রমাগত কাজ। এমনকি সবজি বিক্রি করা শেষে পৌঁছে যান নিজের দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে কাজে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি আবার বিকেল হলেই পৌঁছে যান সকলের কাছে। বর্তমানে তাঁর এই কাজের প্রশংসায় মেতেছে এলাকাবাসীরা।

বাবা জহর সাহা শস্য ডাল মিলের একজন শ্রমিক ছিলেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই সংসারে অভাব অনটন লেগেছিল এবং পরবর্তীতে সংসার টানার জন্য ফুটপাতে বসে ফল পর্যন্ত বিক্রি করতে হয় জহরবাবুকে। বাবাকে সাহায্য করতে পরবর্তীতে মাধ্যমিক পাশ শিমুল সাহা সবজি বিক্রি করতে বসে পড়েন। বর্তমানে তৃণমূলের কাউন্সিলর হলেও জীবনে কষ্টের দিনগুলিকে আজও ভুলতে পারেননি তিনি। বর্তমানে স্ত্রী এবং দুই সন্তান সহ সুখেই বসবাস করেন তারা।

এই প্রসঙ্গে শিপুলবাবু বলেন, “১৯৯২ সালে জাতীয় কংগ্রেসের সাথেই আমার রাজনৈতিক কেরিয়ারের শুরু হয় এবং পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূল দলে যোগ দিই। ২০১৭ সালে প্রথম আমার কাউন্সিলর পদে দাঁড়ানো এবং সেখানেই আমি জয়ী হই। বর্তমানে মাসিক ভাতা হিসেবে যে টাকা পাই, তা সামান্য। সেই কারণে সবজি বিক্রি করা চালিয়ে যাচ্ছি। সংসারকে সচল রাখার জন্য সবকিছুই করে চলেছি আমি। আগামী দিনেও সবজি বিক্রি চালাবো।”

এলাকার কাউন্সিলর সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক বাসিন্দা জানান, “ও কাউন্সিলর হয়েই এলাকায় অনেক উন্নতি ঘটিয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, শিপুল আগে যেমন ছিল, এখন ঠিক তেমনি রয়ে গিয়েছে। বাজারে বসে সবজি বিক্রি করার পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে ব্যবহারেও কোন পরিবর্তন আসেনি ওর।”


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর