রাস্তায় ফেলা দুধের প্যাকেট থেকে বেরোলো সোনার আংটি, মধ্যমগ্রামে বিপাকে দিলীপ ঘোষ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গরুর দুধে সোনা আছে এই দাবিতে বছর দেড়েক আগে সরব হয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। এবার সেই প্রসঙ্গ টেনেই দিলীপ ঘোষের প্রচার কর্মসূচীতে অভিনব বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল।
এদিনের এই ঘটনার রঙ্গমঞ্চ মধ্যমগ্রাম। এদিন মধ্যমগ্রাম পুরসভায় বিজেপির হয়ে প্রচারে আসেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই রাস্তায় দুধ ঢেলে দুধের প্যাকেট থেকে সোনার আংটি বের করে প্রতিবাদ দেখায় তৃণমূল।

মধ্যমগ্রামের আরতি সিনেমা হল সংলগ্ন জায়গায় দিলীপ ঘোষ আসছেন শুনে সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল দুই দলই। দিলীপ ঘোষ পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে থেকে এলাকায় জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। এর উত্তরে জয় বাংলা স্লোগান ওঠে তৃণমূলের তরফে। এরপরই বিজেপির তরফে বন্দেমাতরম স্লোগান দেওয়া হলে তাতে গলা মেলায় তৃণমূলও। দিলীপ ঘোষ এলাকায় এসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় প্যাকেট প্যাকেট দুধ ঢালতে থাকেন তৃণমূল কর্মীরা। সেই দুধ থেকে সোনার আংটি বের করে বিজেপি নেতাকে দেখাতে থাকেন তাঁরা। তাঁর গাড়ি ঘিরে চলতে থাকে জয় শ্রীরাম স্লোগান। একই সঙ্গে যে যে এলাকায় দিলীপ ঘোষ প্রচার সেরেছেন সেই সমস্ত এলাকা দুধ এবং গঙ্গাজল ছিটিয়ে ধোয়া হয় তৃণমূলের তরফে।

স্থানীয় এক যুব নেতা বলেন, ‘একজন ব্যক্তি যিনি গরুর দুধে সোনা পান, যাঁর কাছে বাংলার মানুষ কুকুর ছাগল, যাঁর মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে দ্বিধা বোধ হয় না, সেরকম একজন অশিক্ষিত লোক আজকে বারাসাতের শিক্ষিত সমাজের মধ্যে এসে ঘুরে গেলেন। যেখানে যেখানে এই অপদার্থ লোকটি ঘুরেছেন সেখানে সেখানে আমরা দুধ এবং গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধিকরণ করছি। যাতে বারাসাতের পরবর্তী প্রজন্ম কখনও না শেখে যে গরুর দুধে সোনা আছে।’

পুরো বিষয়টিকে নিজে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েননি দিলীপ ঘোষও। তিনি বলেন, ‘মানুষ দেখা করতে এসেছে, বিভিন্ন ভাবে তারা আমাদের স্বাগত করছে, কেউ জয় বাংলা বলে স্বাগত করছে, কেউ জয় শ্রীরাম বলে করছে। ধন্যবাদ তাদেরকে।’ একই সঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এইধরণের সংস্কৃতিই পুরো পশ্চিমবাংলায় চলছে। রাস্তা আটকানো হচ্ছে। নিজেরা না পারলে পুলিশ দিয়ে আটকাচ্ছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে তৃণমূল রাজনীতিকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। বাংলার মানুষের মান সম্মানের প্রশ্ন এর সঙ্গে যুক্ত। যে যত বড় শয়তান সে তত বড় নেতা তৃণমূলে। পুরো পার্টিটাই সমাজবিরোধীদের পার্টি। একজন সর্দারনী রয়েছেন বাকি সবাই তাঁর অনুগামী।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। আইন-শৃঙ্খলার বালাই নেই। এখানে একটাই পার্টি, তৃণমূল। সেই পার্টিতেও গণতন্ত্র নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত পোস্টকে ডেমলিশ করে, একাই নেত্রী, একটাই পার্টি, ওয়ান ম্যান পার্টি হয়ে গেছে। এটা দেখেই বোঝা যায় রাজ্যের মানুষের অবস্থা কী।’

যদিও পুরো ব্যাপারটিতে বেশ মজাই পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এহেন অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি দেখে হেসেই কুটোকুটি আট থেকে আশি সক্কলেই।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর