বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (Teacher Recruitment Scam) শুনানিতে আলিপুর আদালতে ঢোকার মুখে রাজ্যের বিরোধী দল বাম ও বিজেপি মিলিয়ে তিন নেতার নাম তুলেছেন জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এদিন আদালতে প্রবেশের মুখে সাংবাদিকদের সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন পার্থবাবু। সরাসরি সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম করে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তিনি।
সেই নিয়েই তোলপাড় বাংলা, অন্যদিকে এই মন্তব্য নিয়েও আরেক খটকা। ঘটনাপ্রবাহে দেখা যাচ্ছে পার্থের বক্তব্যের মাত্র ১৮ মিনিট আগে হুবহু সেই নামগুলিই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) টুইটে। যদিও সেই টুইটে শুভেন্দু-দিলীপ ছাড়াও আরও এক বিজেপি নেতার নাম ছিল যা পার্থ বলেননি। এই নিয়ে শুরু জল্পনা।
নেহাতই কাকতালীয়? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো রহস্য? ক্রমশ্যই ঘনীভূত হচ্ছে ধোঁয়াশা। কিকরে তৃণমূল মুখপাত্রের করা টুইটের চারটি নামের মধ্যে তিনটিই মিলে গেল পার্থর বলা নাম গুলোর সাথে? উঠছে প্রশ্ন, প্রত্যাশিত ভাবেই জনমানসে তৈরী হয়েছে কৌতূহল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১.৪২ মিনিটে ঠিক কী টুইট করেন কুণাল? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
এদিন কুণাল টুইট করেন, ‘‘শিক্ষায় নিয়োগ বিতর্ক: দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েক জন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি? তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি? তদন্ত হোক। কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক।’’
শিক্ষায় নিয়োগ-বিতর্ক।
দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েকজন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি?
তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি?
তদন্ত হোক।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক।— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) March 23, 2023
অন্যদিকে, এদিন আদালতে ঢোকার মুখে সংবাদমাধ্যমের সামনে পার্থ বলেন, ‘আমি পরিষ্কার বলছি। আজকে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী বড় বড় কথা বলছেন। তারা কী করেছেন?’ এরপরেই তার মন্তব্য, ‘২০০৯-১০ সালে উত্তরবঙ্গে কী করেছিলেন। সেই সময়কার সিএজি রিপোর্ট পড়ুন।’ প্রসঙ্গত, ২০০৯-১০ সাল রাজ্যে বামেদের রাজ ছিল। তাই মনে করা হচ্ছে একথায় সুজনকেই আক্রমণ করেছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, এরপর পার্থ আরও বলেন, ‘২০১১-১২ সালে আমার কাছে তদ্বির করা হয়েছিল। আমি পরিষ্কার বলেছিলাম, আমি নিয়োগ কর্তা নই। কোনও নিয়োগ আমি বেআইনিভাবে নিয়োগ করতে পারব না।’ নিজের দিক থেকে অভিযোগের তীর সরিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করেন পার্থ বলেন, ‘শুভেন্দু কী করেছিলেন? সেই সময়কার ডিপিএসসিটা একবার দেখুন না!’ অর্থাৎ কুণালের করা টুইটের ৪ টি নামের মধ্যে তিনটি এদিন শোনা যায় পার্থর মুখে।
যদিও এ প্রসঙ্গে কুণালকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি সমাপতনই বলেন তিনি। তার কথায়, ‘‘এই কথা আমি আগেও বলেছি। বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকেও বলেছি। যেটা বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলাম, সেটাই বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করেছি। পার্থবাবু কী বলবেন, তা তো আমার জানার কথা নয়! আমরা যেটা অনেক দিন ধরে বলে আসছিলাম, আমাদের যেটা অবস্থান, সেটাই টুইট করেছি।’’