বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেষ্টর দাপটে কাঁপত বীরভূম। ভোটের আবহে তার ‘চড়াম-চড়াম’, ‘গুড়-বাতাসা’ বহু প্রচলিত। তবে হঠাৎই সব বদলে যায়। ২০২২ সালে গরু পাচার মামলায় সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তারপর প্রথমে আসানসোল জেল পর ইডির কৃপায় তিহাড়ে প্রায় দু’বছর জেলবন্দি থাকতে হয় তাকে। বহু তপস্যার পর অবশেষে ফিরেছেন বাংলায়। গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) গত শুক্রবার জামিন পেয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) ওরফে কেষ্ট। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সেরে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন ‘বীরভূমের বাঘ’।
শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি ওজন কমে অর্ধেক। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। জেলদশা কাটিয়ে ফেরার পর থেকেই চুপচাপ ছিলেন কেষ্ট। অবশেষে বৃহস্পতির রাতে, সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ খুললেন তৃণমূলের দাপুটে এই নেতা। তবে এখনও কি দাপুটেই রয়েছে অনুব্রত? যার নাম বীরভূমে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত, আপাতত তার সেই রূপ অনেকাংশেই বদলে গিয়েছে। এবার অনুব্রত দিলেন ‘শান্তির বার্তা’।
কোনও বিতর্কিত মন্তব্য নয়, রাজনৈতিক বার্তাও নয় আর আক্রমণাত্মক তো নয়ই বরং কেষ্ট বললেন, শান্তির কথা। সকলকে নিয়ে চলার কথা শোনা গেল অনুব্রতর মুখে। বললেন সবাই ভালো থাকুক। তার কথায় যেমন ধরা দিল মেয়ে সুকন্যার জন্য উদ্বেগ তেমনি বন্যা দুর্গত বাংলার মঙ্গল কামনায় মা দুর্গার কাছে প্রার্থনাও করলেন তিনি! বললেন, ‘সকলকে নিয়ে চলব। কোনো ভেদাভেদ নয়। শান্তি বজায় রাখুন। আমি আইনকে ভালবাসি, কোনও বিতর্কে যাব না। সবাই শান্তি বজায় রাখুন। বন্যায় চারিদিকে দুর্যোগ, কৃষির অনেক ক্ষতি হয়েছে। মা দুর্গা বন্যা বন্ধ করুন।”
প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় গত বছর এপ্রিল মাসে ইডির হাতে গ্রেফতার হন সুকন্যা। এই একই মামলায়, তার বাবা অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর পর, ২ বার দিল্লিতে ইডি হাজিরা এড়ান সুকন্যা মণ্ডল। এরপর তৃতীয়বার ইডির ডাকে দিল্লি পৌঁছলে তদন্তকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে ইডি। সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) দীর্ঘ ১৫ মাস পর জেলমুক্তি হয়েছে সুকন্যারও।
আরও পড়ুন:একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা পাবে ১০,০০০ টাকা! কবে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে? রইল হাতেগরম আপডেট
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মেয়ের কথা উঠতেই বাবা অনুব্রতর গলায় ধরা পড়ল আক্ষেপের সুর। (Anubrata Mondal) বললেন,” আমার মেয়ে, আমার সন্তান…তাকে ১৬ মাস জেল খাটানো হয়েছে। ও তো কোনও নেতা-নেত্রী নয়! একটা সাধারণ বাড়ির মেয়ে। ঈশ্বরের কাছে আমি যদি কোনও অপরাধ করি, সেই পাপের শাস্তি আমি পেয়েছি। ” অনুব্রতর এহেন আচরণ দেখে অবাক অনেকেই। অনেকেই বলছেন, জেল ফেরত কেষ্ট এখন আর বাঘ নেই। আপাতত তিনি একজন ‘শান্তিপ্ৰিয়’ মানুষ, ব্যথিত পিতা!