বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরভোটে বাংলায় গোহারা হেরেছে গেরুয়া শিবির। সেই ব্যর্থতার দায় বিরোধী দলনেতার ঘাড়ে চাপিয়ে কটাক্ষ করে ‘মহিলাদের মতন শাড়ি এবং চুড়ি পরে বসে থাকার’ পরামর্শে শুভেন্দু অধিকারীকে শাড়ি, টিপের পাতা, চুড়ি উপহার দিলেন হাওড়ার প্রাক্তন বিজেপি সদর সভাপতি তথা বর্তমান তৃণমূল নেতা সুরজিৎ সাহা। ঘটনায় রীতিমতো ঢি ঢি পরে গেছে এলাকায়। এহেন কাজের তীব্র নিন্দায় সরব সব মহলই।
বুধবার পুরভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় হাতে গোনা কয়েকটি ওয়ার্ড দখল হলেও একটি পুরসভাও নেই বিজেপির ঝুলিতে। আর এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে ওই ‘উপহার’ পাঠান তৃণমূল নেতা।
সুরজিৎ এদিন বলেন, ‘কাঁথি থেকে শিলিগুড়ি হেরেছে শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভা নির্বাচনের দিন আমি শুভেন্দুকে কর্মী না পাঠলে জিততে পারতেন না তিনি। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ আজ কাঁথি পুরসভাতে তাঁর গোহারা অবস্থা। তাই এই জনতা শাড়ি, কানের দুল, কপালের টিপ সমস্ত আনা হয়েছে। এটাও ওঁর প্রাপ্য। শুভেন্দুকে ম্যাক্সি পরিয়ে বসিয়ে রাখব।’ তিনি আরও বলেন, সংগঠন তৈরি করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকেই শেখা উচিত।
তৃণমূল নেতার এহেন কাজে ছিছিক্কার রাজ্য রাজনীতি থেকে শুরু করে ওয়াকিবহাল মহলেও। শুভেন্দু অধিকারীকে শাড়ি এবং চুড়ি পরানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে তাঁর যে তীব্র নারীবিদ্বেষী মনোভাব ফুটে বেরিয়েছে তা সত্যিই নিন্দাজনক। শাড়ি মহিলাদের একটি পোষাক মাত্র। কাউকে শাড়ি পরতে বলে অপমান করা মানে মহিলাদের অপদার্থ, অযোগ্য দেগে দিয়ে গোটা মহিলা জাতিকে অপমান করা। আজ যেখানে নারীরা কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই পুরুষদের থেকে সেখানে এহেম উপমা যেকোনও সভ্য জাতির পক্ষেই লজ্জাজনক। তৃণমূলের দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে একজন মহিলা হওয়া সত্ত্বেও দলের অন্দরে যে তীব্রভাবে ছড়িয়ে রয়েছে পুরুষতন্ত্রের বিষ এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের নারীবাদী সমাজকর্মীরা থেকে শুরু করে একটা বিরাট অংশের সাধারণ মানুষও। ফলে তৃণমূল নেতার এহেন ‘রসিকতা’কে মজার থেকেও ঘৃণার কারণ হিসেবেই নিয়েছেন অধিকাংশ রাজ্যবাসী।