বাংলাহান্ট ডেস্ক : নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন হলেন ইছাপুরের তৃণমূল নেতা। অভিযোগের তীর সরাসরিই বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত থেকেই এই ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা যাচ্ছে, শনিবার রাত ৯ টা নাগাদ দলীয় কার্যালয় থেকে ইছাপুরের বাবজি কলোনি এলাকায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন নোয়াপাড়া শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল মজুমদার। এই সময়েই তাঁর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতিরা। প্রথমে মাথার পিছন দিকে কোনো ভারি জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়। তারপর তিনি অজ্ঞান হয়ে গেলে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় তাঁকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে অত্যন্ত কাছ থেকে করা হয় গুলিও। এরপর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গোপালবাবুর।
এরপর রাতেই তাঁর দেহ উদ্ধার করে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসারা। তারপর তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে।অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই গোপালবাবু এবং তাঁর স্ত্রী শিপ্রা দেবীকে খুনের চেষ্টা চলছিল। শিপ্রা মজুমদার স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। কিছুদিন আগেও তাঁদের দুজনকে কুপিয়ে খুন করার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতিরা। কিন্তু সে যাত্রায় পালিয়ে বাঁচেন তাঁরা।স্বামীর মৃতুতে শোকাহত শিপ্রা দেবী। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। এত ভালো ছিল মানুষটা, পার্টি ছাড়া আর কিছু বুঝত না৷ সেই মানুষটাকে এভাবে সরিয়ে দিল! আমি এর বিচার চাই।’
অন্যদিকে আবার খানিক ভিন্ন মত নিহত তৃণমূল নেতার মেয়ের। কারও নাম না করেই তাঁর অভিযোগ, ‘ভালো কাজ করছিল বাবা, সেই কারণেই সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা উন্নতি করছিল। তাই সরিয়ে দিল। বাবা বেশ কিছুদিন ধরে রোজই বলছিল ওরা নাকি বাবাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু কারা তা কিছু বলেনি।’ তিনি আরও জানান, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো করে আমার বাবাকে চেনেন। আমার আর কিছু চাই না, আমার বিচার চাই’।
পুরো ঘটনাটির তদন্ত করছে পুলিশ। এই খুনের ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তাদের দাবি বিজয়ের সঙ্গে গোপাল বাবুর ব্যক্তিগত ঝামেলার জেরেই ঘটেছে ঘটনাটি। এলাকার জনপ্রিয় নেতার মৃত্যুতে কার্যতই তীব্র উত্তেজনা ইছাপুরে।