বাংলাহান্ট ডেস্ক : আনুগত্যের ইনাম দেয়নি দল। মেলেনি পুরভোটের প্রার্থীপদ। পাশে নেই কোনো নেতৃত্ব। এই অভিমানেই এবার দল ছাড়তে চলেছেন পুরোনো তৃণমূল নেতা রত্নদীপ মান্না। দলত্যাগের পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে করা ত্রিপল চুরির মামলাও তিনি প্রত্যাহার করে নেবেন বলেই জানিয়েছেন।
রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির হাত ধরে ১৯৯৮ সালে তৃণমূলী রাজনীতিতে পা রাখেন রত্নদীপ। এরপর অগাধ আনুগত্যের সঙ্গে দলের হয়ে লড়ে গেছেন বিশ্বস্ত সৈনিকের মতন। হালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন কাঁথির এই নেতা। এমনকি শুভেন্দু গড়েও তিনি আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। এবার আশা ছিল পুরভোটের টিকিট তাঁকে দেবে দল। কিন্তু তীরে এসেও তরী ডোবে। টিকিট দেওয়া হয় সদ্য বিজেপি ফেরত প্রাক্তন কাউন্সিলর অতনু গিরিকে। যার জেরেই তীব্র অসন্তোষে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন রত্নদ্বীপ মান্না।
জানা যাচ্ছে, এবার পুরভোটে কাঁথি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টিকিট পাবেন বলেই আশা করেছিলেন রত্নদীপ মান্না। একপ্রকার নিশ্চিতই ছিলেন তিনি যে এতবছর বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবে এবার মিলবেই এই প্রার্থী পদ। কিন্তু তার বদলে হঠাৎই বিজেপি ত্যাগ করে দলে সদ্য যোগ দেওয়া অতনু গিরিকে টিকিট দেয় দল। এলাকায় শুভেন্দু ঘণিষ্ঠ বলেই পরিচিত অতনু। গত ১ ফেব্রুয়ারি পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের হাত ধরে ১৩ মাস পর আবার তৃণমূলে ফেরেন তিনি। আর এর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তাঁকে টিকিট দেয় দল। পুরো ঘটনায় তীব্র বিক্ষোভ এবং বিদ্রোহ চলছে এলাকা জুড়ে।
রত্নদীপ বলেন, ‘দল যখন আমার কথা ভাবেনি আমি কেন দলের কথা ভাবব! আমার বিপদ হলে তো দল আমাকে দেখবে না। তাই আর কোনো ঝুঁকিই নেব না আমি। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে যখন ত্রিপল চুরির মামলা করি তখন দলের কাউকেই পাশে পাইনি। কোনো নেতৃত্ব আমার সঙ্গে ছিলেন না। কয়েকদিন আগে অবধি যাঁরা বিজেপি করতেন, এখনও করেন কিনা কে জানে, দলে যোগ দেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই টিকিট পেলেন তাঁরা। কেউ কখনও দাঁড়ায়নি আমার পাশে। দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় ফোন করে অবধি ডাকেনি একটা বার।’ শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে করা ত্রিপল চুরির মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল মামলাটি।
তবে কি এবার বিজেপিতেই যেতে চলেছেন তৃণমূলের পুরোনো সৈনিক? তা নিয়ে তীব্র জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে। তবে পুরো ঘটনায় যে খানিক অস্বস্তিতে সেকথা আর বলে দিতে হয় না নতুন করে। এদিকে, পুরভোটের আগে রত্নদীপের এই সিদ্ধান্ত যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলার কাঁটা দূর করতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পুরভোটের আগে এটা শুভেন্দু অধিকারীর একটি বড় জয় হিসেবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।