বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এবার একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি তরজা শুরু হলো। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নাম ‘শুভেন্দু প্রেমে আসক্ত আমরা’। জানা যাচ্ছে, এই গ্রুপের অ্যাডমিন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং এই গ্রুপে রয়েছেন দুই তৃণমূল নেতা! আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর এলাকায় শুরু হলো রাজনৈতিক চাপানউতোর।
দাসপুর এলাকার তৃণমূল দলের এক উপপ্রধান ও যুবনেতার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তাঁরা সেই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান এবং পরবর্তীতে তারা দাবি করেন যে, এরকম কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যে তাঁরা রয়েছেন, এটি তাঁদের জানাই ছিল না। কিন্তু এ সকল দাবি সত্বেও বর্তমানে বিতর্ক থামার কোন লক্ষণই নেই।
জানা যাচ্ছে, দাসপুরের তৃণমূলের যুব নেতা কৌশিক কুলভি তমলুক ঘাটাল সমবায় ব্যাংকের পরিচালন কমিটির সম্পাদক পদে নিযুক্ত রয়েছেন এবং অপর তৃণমূল নেতা কাজল সামন্ত এলাকায় তৃণমূল পরিচালিত বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসেবে কর্মরত। শনিবার এই দুই ব্যক্তির শুভেন্দু অধিকারী দ্বারা পরিচালিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা নিয়ে শুরু হয় জোর তরজা। এরপরে তারা গ্রুপ ছাড়লেও থেমে থাকেনি বিতর্ক।
তাঁদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, শুভেন্দু কিছুদিন পূর্বেও তৃণমূল দলে ছিলো এবং সেই সময় হয়তো এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি তৈরি করা হয় এবং পরবর্তীকালে সেই গ্রুপ ছাড়তে ভুলে যান এই দুই নেতা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে শুভেন্দু অধিকারী প্রতিনিয়ত তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একের পর এক কড়া ভাষায় আক্রমণ করে চলেছেন, সেই অবস্থায় কিভাবে এহেন ভুল করতে পারে তাঁরা, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই।
এ প্রসঙ্গে এদিন মুখ খোলেন কাজলবাবু। তিনি বলেন, “যখন উনি তৃণমূল করতেন তখন ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বর্তমানে তিনি বিজেপি করেন, তাই আর কোনো যোগাযোগ নেই। অজান্তেই আমরা এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছিলাম, কিন্তু বিষয়টি জানতে পেরে বেরিয়ে গেছি।” তিনি আরো বলেন, “তৃণমূলে আছি এবং তৃণমূলেই থাকবো। যখন দাদার অনুগামী হয়ে কাজ করার আবেদন আসে আমার কাছে, তখন স্পষ্ট জানিয়ে দি যে, বিজেপিতে যোগ দেব না। এটা নিয়ে বর্তমানে অহেতুক রাজনীতি চলছে।” এছাড়া তিনি যে ওই গ্রুপে কোনদিনও মেসেজ করেননি, সে বিষয়টিও স্পষ্ট জানান কাজল বাবু।
অপর নেতা কৌশিক কুলভি বলেন, “আগে যদি জানতাম, তবে বেরিয়ে যেতাম। শনিবার আমি এ বিষয়ে জানতে পারি এবং জানার সঙ্গে সঙ্গেই বেরিয়ে গেছি।” তবে বিষয়টি সামনে আসার পর শাসক দলকে বিঁধেছেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। তিনি এদিন বলেন, “বিজেপি দলের আদর্শ মেনে কাজ করতে চাইলে স্বাগত। তবে তৃণমূলে থেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা মেনে নেওয়া যায় না। তৃণমূল দলের অনেকে বর্তমানে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। এ বিষয়টি নেতৃত্ব দেখছে এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কিভাবে তৃণমূলের নেতারা হাজির ছিলেন, সেটিও দেখা হচ্ছে।”
তবে এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ এলাকার তৃণমূল কর্তৃপক্ষ। তারা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের ওপর ছেড়ে দিয়ে এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানায়, “এ বিষয়টি আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তারাই নেবে।”