বাংলা হান্ট ডেস্কঃ “৫ হাজার টাকা না দিলে কোন বাবা তোমার ঘরের ছবি তোলে আমি দেখব।” এমনই বক্তব্য শোনা গেল দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েতের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা না পাওয়া লাভার্থীদের মুখে। প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন, অথচ দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে গেলেই নেতাদের দিতে হবে ঘুষ। ফের একবার কার্যত কাটমানি ইস্যুতে অস্বস্তির মুখে পড়ল রাজ্যের শাসক দল। এর আগেও শাসকদলের বিরুদ্ধে কাটমানি ইস্যুতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এবার খোদ গ্রামবাসীদের মুখেই শোনা গেল এই সমস্যার কথা।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, যাদের পাকা ঘর নেই তাদের জন্য সরকারি সাহায্য। কিস্তির টাকা আসে বেশ কয়েক দফায়, প্রথম দফার কাজ শেষে ঘরের ছবি তুলে পাঠাতে হয় সরকারকে। তারপরেই পাঠানো হয় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা, কিন্তু সেই টাকা পেতে গিয়ে সমস্যা। দিতে হচ্ছে লাগাতার কাটমানি, কখনও ৫০০০ কখনও ১০০০০ হতদরিদ্র গ্রামবাসীদের থেকে দাবি করছেন এলাকার তৃণমূল নেতারা। এমনই অভিযোগ উঠল চৌরাশি এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকার এক সিপিএম নেতার দাবি, এ ধরনের ঘটনা এক আধ জনের সঙ্গে নয় ঘটেছে প্রায় পঞ্চাশ-ষাট জনের সঙ্গে।
বাসিন্দা শরিফুল মন্ডল বলেন, “এখন বলছে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে না হলে ঘরের ছবি তোলা হবে না। এই ঘটনা আমি প্রকাশ্যে আনার পর বলছে তোমরা সরকারি লোকের কাছে জানিয়েছে সরকার এসে ছবি তুলে নিয়ে যাবে আমরা আর ছবি তুলব না।” বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে একহাত নিয়েছেন বিজেপি নেতা তরুণকান্তি ঘোষ। তার দাবি, শুধু চৌরাশি নয় অন্যান্য পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পঞ্চায়েত সদস্যরাও একই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন। আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা পেতে গেলে দিতে হবে কাটমানি, দ্বিতীয় কিস্তিতে ফের টাকা, আবার তৃতীয় কিস্তির টাকা পেতে গেলেও দিতে হবে কাটমানি।
অন্যদিকে চৌরাশি পঞ্চায়েতের প্রধান পারভীন সুলতানা জানান, “এখনও আমার কাছে কেউ এ ধরনের কোনও অভিযোগ করেনি। যদি এটা সত্য হয়ে থাকে তাহলে আমরা অ্যাকশন নেব।” অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার বিডিও সুব্রত মল্লিকও। কিন্তু এই ঘটনা ফের একবার যে রাজ্যের শাসক দলকে অস্বস্তিতে ফেলবে তা বলাই বাহুল্য।