বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত দুদিন থেকে বাংলায় চলছে মুকুল ম্যাজিক। কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ দিল্লি পাড়ি দিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায় (Mukul Roy)। অসুস্থ মুকুলের দিল্লি যাত্রায় বেজায় চিন্তিত পুত্র শুভ্রাংশু রায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বাবা কেমন আছে সেই খোঁজটা আমি পাচ্ছি না। ওষুধপত্র ঠিকঠাক খাচ্ছে কিনা সেটা জানতে পারছি না। খুব চিন্তায় আছি। অন্যদিকে, একা শুভ্রাংশুই নয়, সতীর্থ মুকুলের জন্য দুশ্চিন্তা হচ্ছে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রেরও (TMC MLA Madan Mitra)।
তবে মদনের চিন্তাটা অন্য জায়গায়। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই মুকুল রায়ের মাথায় বসানো হয়েছে চিপ। সেই চিপ নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন মদন মিত্র। এই নিয়ে এদিন এক সংবাদমাধ্যমকে মদন বলেন, “ঘটনা পরম্পরা দেখে অক্ষয় কুমার অভিনীত একটি ছবির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। অক্ষয় কুমারের একটি সিনেমাতে দেখিয়েছিল, শরীরে চিপ ঢুকিয়ে দিলে লোকেশন ট্র্যাক হয়ে যাবে এবং সব গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে।”
এখানেই কামারহাটির বিধায়কের দাবি, “বিজেপি তার ডিজিটাল টিম দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। এ সব না করলে তো মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো কিছু করা যাচ্ছে না।” শুধু তাই নয়, মুকুল রায়ের জন্য নিজের উদ্বেগের কথাও জানান মদন। কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই তিনি বলেন, “এই ঘটনায় আমি খুব চিন্তিত। বাড়িতে বলেছি কেউ কোনও ইঞ্জেকশন দিতে এলে যাচাই করে নিতে। বিজেপি হয়তো নতুন কোনও চিপ বের করেছে। সেই মানুষের শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হাল্লা রাজা চিপ দিয়ে সবাইকে বোকা করে দিয়েছিল।”
শুধু তাই নয়, এরপর মুকুলকে খুঁজতে এবার ইডি, সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন মদন। ফের ব্যঙ্গের সুরে তিনি বলেন, “আমি চাইব মুকুলের হঠাৎ কী হল, তা তদন্তের দায়িত্ব ইডি-সিবিআইকে দেওয়া হোক। সব কিছুই যখন ইডি-সিবিআই তদন্ত করছে, তখন ওরা বের করুক মুকুলকে কারা দিল্লি নিয়ে গেল। মুকুল রায় শুধু দেশের একজন নাগরিক নয়, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী, বর্তমান বিধায়ক। তাকে দিয়ে কখন কী করিয়ে দেবে বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো এটাও বলাতে পারে যে ২০ জন বিধায়ক টাকা নিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় রটে যায় মুকুল রায় নিখোঁজ। মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু দাবী করেন অপহরণ করা হয়েছে তার বাবাকে। অন্যদিকে দিল্লি থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে মুকুল রায় জানিয়ে দেন তিনি বিজেপিরই সদস্য। বলেন, ”বিজেপিতে ছিলাম আছি, থাকব। অসুস্থতা ছিল, স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন, সেই সময় মানসিক অবসাদে ছিলাম, তৃণমূলে গিয়েছিলাম।”
পাশাপাশি বিস্ফোরক দাবি করে তিনি বলেন, “তৃণমূল ভবনে গিয়ে গলায় উত্তরীয় পরে ভুল করেছিলাম। খামখেয়ালিপনা করে আমি তৃণমূল ভবনে গিয়ে গলায় উত্তরীয় পরেছিলাম। ওটা ঠিক কথা নয়। আমি বিজেপিতে ছিলাম, বিজেপিতেই আছি।” মুকুলের এই মন্তব্য সামনে আসতেই শোরগোল পরে গিয়েছে সর্বত্র। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।