বাংলাহান্ট ডেস্ক : রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নাম জড়ানো ভাদু শেখ, আনারুল হোসেন কিংবা নন্দীগ্রামের শেখ সুফিয়ানের জাহাজ বাড়ি ছাড়াও রাজ্যের আরও একাধিক তৃণমূল নেতার প্রাসাদোপম বাড়িই নজর কাড়ে বহুদূর থেকেই। এই তালিকায় অন্যতম শ্রেষ্ঠগুলির একটি তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেনের বাড়ি। মুর্শিদাবাদের খাগড়া রেল স্টেশন সংলগ্ন বাড়িটি ওই রাস্তা ধরে আসা যাওয়ার পথে চোখে পড়তে বাধ্য। মুর্ধিদাবাদের রানিনগরের বিধায়কের এই বাড়িকে ঘিরেই তুঙ্গে এখন চর্চা।
প্রায় কাঠা তিনেক জমির উপরে বানানো এই বাড়িটি। তিন তলা বাড়ির অনেকটাই ঢাকা নীল কাচ দিয়ে। দূর থেকে দেখলেও নজর যেন আটকে যায় বাড়িটিতে। রয়েছে একাধিক এসিও। বাড়িটি তৈরি করতে প্রায় কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলেই সূত্র মারফত খবর। আর তার ফলেই বিতর্ক শুরু হয়েছে এই প্রাসাদোপম বাড়িকে ঘিরে।
কিন্তু এই ব্যাপারে কী মত বিধায়কের? কী জানাচ্ছেন তিনি? সৌমিক হোসেনকে বাড়ির বিতর্কের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সাফ জানান, ‘বাড়ি থাকা কি নিষেধ আছে কোথাও? থাকতেই পারে বাড়ি। ২০০০ সাল থেকে বাড়িটি রয়েছে। আমি এখানেই থাকি। আমরা কি ভিখারি নাকি? আমাদের যে বাড়ি রয়েছে সবগুলিই ২০০০ সালের বাড়ি। এই নয় যে কালকে হয়েছে। যারা এই সব করছে তারা পাগল হয়ে গিয়েছে । এরা মুর্শিদাবাদের মানুষ নয়। আর পাগলা কুকুর কী বলল না বলল তাদের বলতে দিন। সবটাই জেলার মানুষ জানে।’
তাঁর বাড়ি নিয়ে এই দাবিকে ঘিরে অবশ্য সোচ্চার মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। তাঁর পালটা দাবি, ‘রাজনৈতিক অবক্ষয় হয়েছে বাংলায়।আগে যাঁরা রাজনীতি করতেন তাঁদের পোশাক, সততা, বাড়ি ঘর দেখে মানুষ রাজনীতিতে আসতেন। বর্তমানে রাজনীতিতে তাঁরাই আকর্ষণীয় যাঁদের দশটি আঙুলে দশটি আঙটি। গলায় কুকুর বাঁধা চেনের মতো মোটা চেন রয়েছে। চার-পাঁচটি বাড়ি আর বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে।আগে বড় বাড়ি মানে মানুষ বুঝত জমিদারের বাড়ি। আর এখন পাড়ায়-পাড়ায় বড় বাড়ি দেখলেই সাধারণ মানুষ বুঝে নেবে ওটা তৃণমূল নেতার বাড়ি’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মান্নান হোসেনের ছেলে সৌমিক হোসেন। তাঁর এক ভাইও রয়েছেন। প্রথম জীবনে কংগ্রেসেই নাম লিখিয়েছিলেন দুই ভাইও। কিন্তু পরবর্তীকালে ২০১৪ সালে তৃণমূলে যোগ দেন তাঁরা। এরপর ২০১৬ সালে তৃণমূলের যুব সভাপতি পদের পর অবশেষে শেষমেশ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে রানিনগর থেকে জিতে বিধায়ক হন সৌমিক। তাঁর বাড়িকে ঘিরে এহেন বিতর্কের সৃষ্টি হলেও তিনি যে তাতে খুব একটা পাত্তা দিতে মোটেই আগ্রহী নন, তা বলাই বাহুল্য।