বাংলাহান্ট ডেস্ক : সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি এখন বাংলায় খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। এবার এল নতুন চমক। সরকারি চাকরির (Government Job) পর এবার দলীয় পদ পাইয়ে দিতেও টাকা নেন তৃণমূলের নেতারা। এমনই অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) ইদ্রিশ আলির (Idrish Ali) বিরুদ্ধে। কিন্তু টাকা নিয়ে পদ দেননি ইদ্রিশ। তাই তাঁর বাড়িতে তাণ্ডব চালালেন দলেরই কর্মী-সমর্থকরা। তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক।
জানা যাচ্ছে, তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতিতেই তাঁর বাড়িতে তাণ্ডব চালায় দলীয় কর্মীদের এক অংশ। নির্বিচারে চলে ভাঙচুর। ওলট-পালট করে দেওয়া হয় ঘরের আসবাব পত্র। বাড়ির ভিতরে তখন রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। ঠিক তখনই বাড়ির জানলায় পড়তে থাকল একের পর এক বাঁশ-লাঠির আঘাত। বাড়ির বাইরে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লো টেবিল চেয়ার।
দলীয় পদ পাইয়ে দেবেন তিনি। তার জন্য দিতে হবে মোটা টাকা। টাকা দিলেও মেলেনি পদ। তাই টাকা নেওয়ার অভিযোগে সোমবার ভয়ংকর তাণ্ডব চলল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিশ আলির বাড়িতে। তৃণমূল কর্মীদের একাংশ অভিযোগ করেন, দলে পদ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সবজির ব্যাগে করে ১২ লক্ষ টাকা নেন ইদ্রিশ আলি। সরাসরি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। পাল্টা আইনি ব্যবস্থার নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
বাড়ি-গাড়ি ভাঙচুর এবং দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের পরই পুলিশের দ্বারস্থ হন ইদ্রিশ আলি। গতকাল রাতেই বিধায়কের আপ্ত সহায়ক ভগবানগোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে সূত্রের খবর। অভিযোগ দায়ের হয়েছে কুঠিরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি মোস্তাফা শেখ-সহ ৪০-৫০ জন দলীয় কর্মীর বিরুদ্ধেই। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে তৃণমূল বিধায়ককে হেনস্তা এমনকি খুনের চেষ্টাও করে দুষ্কৃতিরা।
একের পর এক দুর্নীতির খবরে রাজ্যে শাসকদলের এমনিতেই হাঁসফাঁস অবস্থা। এই রকম পরিস্থিতিতে দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো অস্বস্তিতে তৃণমূল। এই সুযোগে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপিও। প্রসঙ্গত, গত শনিবারই পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয় করার অভিযোগে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী-ছেলেকেই মারধর করে এলাকার মানুষজন। আর তারপরই দলীয় পদ পাইয়ে দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে এলো।
উল্লেখ্য, এর আগে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ না জানানোয় এই ইদ্রিস আলিই বলেছিলেন যে, শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হবে মোদীর। উনি এটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, শ্রীলঙ্কায় যেমন রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছিল জনতা, তেমনই মোদীর বাসভবনে ঢুকেও একই কাজ হবে। তবে, ওনার সেই ভবিষ্যদ্বাণী বুমেরাং হয়ে ওনার দিকেই ফিরে চলে এল।