বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য। রাজ্যের সকল প্রান্ত থেকে উঠে আসছে পাহাড় প্রমান দুর্নীতির অভিযোগ। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার (Tapas Saha)। দমকল থেকে শিক্ষক নিয়োগ, একাধিক জায়গায় দুর্নীতি করার অভিযোগে বিদ্ধ তিনি। আর এবার এসব অতীত! টাকার বিনিময়ে ডব্লুবিসিএস (WBCS) পরীক্ষা পাশ করিয়ে রাজ্যের পদস্থ আমলার পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাপসবাবু ও তার প্রাক্তন আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালের বিরুদ্ধে।
ইতিমধ্যেই এই নিয়ে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখা প্রবীর কয়ালের কাছ থেকে নথি উদ্ধার করেছে। প্রবীরের কাছ থেকে রাজ্যের আবগারি দপ্তরে নিয়োগের বিভিন্ন নথি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। তার হাওড়ার শ্যামপুরের বাড়িতে তল্লাশিতে মেলে কৃষি দফতরের নথিও। পাশাপাশি নিয়োগের জন্য বায়োডাটা উদ্ধার করে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখার গোয়েন্দারা। বর্তমানে সেসব নথি খতিয়ে দেখছে সিবিআই (CBI)।
অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অবাধে দুর্নীতি হাকিয়ে যান বিধায়ক তাপস সাহা ও তার সঙ্গীরা। নদিয়া ও আশপাশের জেলা থেকে বিভিন্ন স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। পাশাপাশি দমকল ও স্বাস্থ্য দপ্তরে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নাম টাকার লেনদেন চলেছিল বলেই সূত্রের খবর।
টাকার বিনিময়ে ডব্লুবিসিএস চাকরির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় স্থানীয় এক ব্যক্তির বয়ানে। বেতাইয়ের ওই বাসিন্দা রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের জানান তাপসবাবুর প্রাক্তন আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়াল তাকে বলেছিলেন, তাপস সাহা মারাত্মক প্রভাবশালী, রাতকেও দিন করার ক্ষমতা রাখেন তিনি। এই বলেই ওই ব্যক্তির ভাইপোকে টাকার বিনিময়ে ডব্লুবিসিএস পাশ করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রবীর।
ওই ব্যক্তির অভিযোগ, বিধায়ক তাপস সাহার নাম করে প্রবীর কয়াল ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দফায় দফায় তার কাছ থেকে মত ২৪ লক্ষ টাকা নেন। প্রতিশ্রুতি ছিল চাকরি পাইয়ে দেওয়ার। যার মধ্যে ১৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নগদে দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। বাকি টাকা তৃতীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে পাঠানো হয় বলে খবর মিলেছে। তবে চুক্তির সব টাকা দেওয়ার পরও চাকরি না মেলায় টাকা ফেরত চাওয়া হয়। কিন্তু সেই প্রভাবশালী তকমার ছত্রছায়ায় তাকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভয়েই তিনি কখনও অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি বলেও জানিয়েছেন। এই সকল সূত্র ধরেই এবার তদন্তের গভীরে পৌঁছতে চাইছে সিবিআই।